শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:১৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
জব্দ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর রিট আরেক হত্যা মামলায় সাবেক বিচারপতি মানিককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে মানহানির মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান উৎপাদনে ফিরলো কর্ণফুলী পেপার মিল ২০৫০ সালের মধ্যে ৪ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণে দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা, দলবল নিয়ে ঘুরছেন পার্কে পিআইবির নতুন ডিজি ফারুক ওয়াসিফ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম আবদুল্লাহ ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পোশাক শিল্প আইন আপনার হাতে তুলে নেয়ার কারো কোনো অধিকার নেই :স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দেয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বললেন মির্জা ফখরুল

অগ্নিঝরা মার্চ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ৩ মার্চ, ২০২১

বাংলাদেশের জনগণের পরম ও চরম অর্জন মহান স্বাধীনতার মাস মার্চের চতুর্থ দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধিকার আন্দোলন জোরদার করার লক্ষ্যে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র দ্বিতীয় দিনের মতো সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। গোটা পূর্ববঙ্গ সে সময় স্লোগানমুখর ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’ অথবা ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা’।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৩ মার্চের জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিতের প্রতিবাদে ৬ তারিখ পর্যন্ত হরতাল পালনের ডাক দিয়েছিলেন। তিনি সেই সাথে সামরিক আইন প্রত্যাহার করে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরেরও দাবি জানিয়েছিলেন। অন্যদিকে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্বাধীনতার আওয়াজ উঠেছিলো। পূর্ব পাকিস্তানের স্থলে ‘বাংলাদেশ’ বলা শুরু হয়েছিলো। মার্চের শুরু থেকেই সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও সংগ্রাম তুঙ্গে উঠতে থাকে। সেই আন্দোলন ক্রমান্বয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে পরিণত হয়েছিলো। প্রতিটি রাজনৈতিক দল এবং কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র ও পেশাজীবী সংগঠন স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রস্তুতি পর্বে অংশ নিয়েছিলো। প্রতিদিন কোনো না কোনো দল মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করেছিলো। এদিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা ভবন সংলগ্ন বটতলা ও বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, সমাজবাদী জোট ও ছাত্র ইউনিয়ন সমাবেশ করেছিলো। একাত্মতা ঘোষণা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২৮ জন শিক্ষক যৌথ বিবৃতি দিয়েছিলেন।
এর আগে ১ মার্চ এক ঘোষণায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করেন। একই দিন লে. জেনারেল সাহেবজাদা ইয়াকুব খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গবর্নর নিয়োগ করা হয়। জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সামরিক পরিকল্পনার কথা জেনে জেনারেল ইয়াকুব খান ৪ মার্চ পদত্যাগ করেন। পদত্যাগের কারণ হিসেবে বলেন, তিনি পাকিস্তানী ভাইদের হত্যা করতে পারবেন না।
দৈনিক ইত্তেফাকে ৪ মার্চ ‘৭১-এর এক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, “সেনাবাহিনীর গুলীতে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ৭৫ জন নিহত হয়। ৩ মার্চ চট্টগ্রামের ফিরোজ শাহ কলোনি, ওয়্যারলেস কলোনি, আমবাগান, পাহাড়তলী, জুট ফ্যাক্টরি এবং সন্নিহিত অন্যান্য এলাকায় সকাল হইতে অপরাহ্ন পর্যন্ত অগ্নিকা-, হামলা, প্রতি-হামলা, প্রাইভেট বন্দুকের গুলীবর্ষণ, সংঘর্ষ এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর গুলীবর্ষণ ইত্যাদি ঘটনায় অন্যূন অর্ধশতাধিক লোক প্রাণ হারাইয়াছে এবং কয়েক শত আহত হইয়াছে। চট্টগ্রামের উপরোক্ত অবাঙালি এলাকা হইতে সিভিল পোশাক পরিহিত ২০তম বেলুচ রেজিমেন্টের সৈন্যদের অবস্থান ও গুলীবর্ষণের সংবাদ শহরে দাবানলের মতো ছড়াইয়া পড়ে এবং সমগ্র শহরে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি করে। এ সংবাদে স্থানীয় ইপিআর সৈনিকদের উত্তেজিত হইতে দেখা যায়।
২০১৪ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত লে. কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী তার ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১’ শীর্ষক গ্রন্থে একাত্তরের ৪ মার্চের ঘটনাপ্রবাহ সংক্ষেপে তুলে ধরেন এভাবে- “পদচ্যুত গবর্নর ভাইস এডমিরাল এসএম আহসান বিমানযোগে করাচীর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করলেন। একই দিনে অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল আসগর খান আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানান। ঐ দিন থেকেই ঢাকা রেডিও এবং টেলিভিশনের বাঙালি কর্মচারীদের উদ্যোগে ‘রেডিও পাকিস্তান ঢাকা’ কেবল ‘ঢাকা বেতার কেন্দ্র’ এবং ‘পাকিস্তান টেলিভিশন’ কেবল ‘ঢাকা টেলিভিশন’ নামে নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করে।
এদিকে, ‘জেনোসাইড বাংলাদেশ’ নামের একটি ওয়েবসাইটে ৪ মার্চের ঘটনাবলী উল্লেখ করা হয় এভাবে, “অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত ছিল। মুজিব তার ডাকে সাড়া দেয়ায় জনগণকে অভিনন্দন জানান। তিনি সরকারি ও বেসরকারি অফিসসমূহের কর্মচারীদের বেতন বেলা আড়াইটা থেকে সাড়ে ৪টার মধ্যে পরিশোধের আহ্বান জানান। এদিন মার্কিন দূতাবাস জানায়, “মুজিব হ্যাজ এডমিটেড টু সেভারেল ফরেন করেসপন্ডেন্টস ‘অব দ্য রেকর্ড’ দ্যাট হি উইল এনাউন্স দ্য ইক্যুইভ্যালেন্ট টু ইন্ডিপেন্ডেন্স ফর ইস্ট পাকিস্তান অন সানডে (মার্চ ৭)। চি ডিড, হাউইভার, গো অন টু সে দ্যাট দ্য ইস্ট এন্ড ওয়েস্ট উইংস সোড রাইট দেয়ার রেসপেক্টিভ কনস্টিটিউশন্স এন্ড দেয়ারআফটার ডিসকাশন্স ওভার দ্য ফরম অব লিংকেজ কোড টেক প্লেস। এট লিস্ট ওয়ান পাকিস্তানী এয়ারফোর্স সি-১৩০ হ্যাজ বিন সীন ফ্লাইং ইনটু ঢাকা দেয়ার আর রিকারেন্ট রিপোর্টস অব ফোর্সেস বিং ফ্লোন ইনটু ঢাকা ভায়া দ্য পাকিস্তানী কমার্শিয়াল এয়ারলাইন এন্ড অব দ্য মুভমেন্ট অব ট্রুপস ফ্রম দ্য ওয়েস্ট ভায়া শীপ…। ইট ইজ নোন দ্যাট দেয়ার ইজ প্রেশার ফ্রম সাম এলিম্যান্টস ইন দ্য মিলিটারি টু মেক এ কুইক রিপ্রেসিভ স্ট্রাইক এগেইনস্ট দ্য ইস্ট পাকিস্তানী লিডার্স ইন হোপ্স অব কাউয়িং দেম এন্ড দ্য রেস্ট অব দ্য প্রভিন্স।”




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com