নওগাঁয় সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন, কোরআন খানি এবং মিলাদ মহফিলের মধ্যে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম সংগঠক বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও সাবেক বানিজ্যমন্ত্রী প্রয়াত আব্দুল জলিলের ৮ম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হয়েছে। দিনব্যাপী কর্মসূচীর অংশ হিসেবে শনিবার সকাল ৯টা থেকে শহরের চকপ্রাণ এলাকায় প্রয়াত নেতা আব্দুল জলিলের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হয়। খাদ্যমন্ত্রী ও নওগাঁ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি প্রথমে জেলা আওয়ামীলীগ এবং পরে খাদ্য মন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় সংসদ সদস্য ছলিম উদ্দিন তরফদার ও আনোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি নির্মলকৃষ্ণ সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক জাভেদ জাহাঙ্গীর সোহেল ও বিভাস মজুমদারসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। প্রয়াত নেতা আব্দুল জলিলের পুত্র সদর আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন বেলা সাড়ে ১১টায় দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে বাবার কবরে পুস্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এদিকে নওগাঁ জেলা যুবলীগ, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগ, জেলা শ্রমিকলীগ, জেলা ছাত্রলীগ, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ এবং এসব সংগঠনের সদর উপজেলা কমিটি, পৌর কমিটি এবং সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটির পক্ষ থেকে কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নওগাঁ জেলা ও সদর উপজেলা কিমিটি, নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাব, নওগাঁ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ-এর পক্ষ থেকেও তাঁর কবরে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় তাঁর কবরের পাশে ছিল উপচে পড়া ভীড়। ব্যক্তি পর্যায়েও অনেক নেতাকর্মী এবং সাধারন মানুষ তাঁর কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। অপরদিকে তাঁর কবরের পাশেই সকাল থেকে দিনব্যপী কোরআন খানি, মিলাদ মহফিলের আয়োজন করা হয়। মো. আবদুল জলিল ১৯৩৯ সালের ২১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি নওগাঁ কে ডি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, ১৯৬০ সালে বগুড়া আজিজুল হক কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট, ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ (সম্মান) এবং ১৯৬৪ সালে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৭ নম্বর সেক্টরের মুখ্য সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করেন আবদুল জলিল। ১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে নওগাঁ সদর আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আবদুল জলিল পরপর দুইবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক, ১৯৯৬ সালে প্রেসিডিয়াম সদস্য, ২০০২ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০০ সালে টেকনোক্র্যাট কোঠায় বাণিজ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালের ৬ মার্চ সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরন করেন।