অবশেষে শিশু শিক্ষার্থীকে বর্বরোচিত বেদড়ক মারধরের সেই ভাইরাল ভিডিওর পাষন্ড শিক্ষক হাফেজ ইয়াহিয়াকে কারাগারে প্রেরন করা হয়েছে। বুধবার(১০মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টায় মডেল থানায় হাফেজ ইয়াহিয়াকে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে বলে থানার ওসি রফিকুল ইসলাম নিশ্চিত করেন। বৃহস্পতিবার সকালেই তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। আটককৃত শিক্ষক মোঃ ইয়াহিয়া ইসলাম(৩২) রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ৬নং ওয়ার্ডের তালেব উল্লাহ সিকদারের বাড়ীর সরফভাটা এলকার মোঃ ইউনুছের পুত্র। মামলা সুত্রে জানা যায়,গতকাল হাটহাজারী পৌরসভার মারকাযুল কুরআন ইসলামিক একাডেমির হেফজ বিভাগের ছাত্র মুহাম্মদ ইয়াসিন ফরহাদ(৮)কে মধ্যযুগীয় কায়দায় বেদড়ক মারধরের ভিডিও ভাইরাল হলে রাতেই পাষন্ড শিক্ষক ইয়াহিয়াকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন পুলিশের সহযোগীতায় আটক করে উপজেলা কার্যালয়ে নিয়ে যায়। বেদম প্রহরকৃত সেই শিশু ইয়াছিন ও তার পরিবারকে হাজির করেন নির্বাহী অফিসার। তাদের ও শিক্ষকের স্বীকারোক্তিতে শিশু নির্যাতন মামলার প্রস্তুতি নিলেও পরিবার পিছু হঠে। একাধিকবার বুঝানোর পরেও ছেলের মা বাবা মামলা করতে অস্বীকৃতি জানালে অদূর ভবিষৎতে এহেন কান্ড না ঘটানোর জন্য শিক্ষক থেকে মুচলেখা দিয়ে ছেড়ে দেয়। পরে মাদরাসা কর্তৃপক্ষও ওই শিক্ষককে বহিস্কার করে। কিন্তু সকালেই উত্তেজিত জনতা মাদরাসায় গিয়ে হট্টগোল সৃষ্টি করলে চট্টগ্রাম নগর ও স্থানীয় সংবাদকর্মীদের ব্যাপক সাড়া পড়ে। স্যোসাল মিড়িয়াতেও চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। এহেন পরিস্থিতিতে বিকেলেই সেই পাষন্ড শিক্ষক ইয়াহিয়া পুলিশের হেফাজতে চলে আসে। সন্ধ্যায় সেই ছাত্র ও তার পরিবারকে থানায় হাজির করিয়ে মামলা রুজু করেন,যার নং ২৩। এ বিষয়ে গতকাল ছেলের মা বাবা অভিযোগ করবেনা বলে লিখিত অভিযোগ দিলেও সারা দেশ থেকে স্যোসাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠলে রাতেই শিক্ষক আটকের পর ছাত্রের মা বাবা মডেল থানাউ উপস্থিত হয়ে শিশু শিক্ষার্থীর পিতা জয়নাল। এদিকে ফেসবুকে ছাত্রের মারধরের ভিডিও ভাইরাল দেখে মানবাধিকার নেতা এসে ছেলেটিকে দেখে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, একজন হুজুরের জন্য সব আলেমকে দায়ী করা যাবেনা। এরকম কর্মকান্ড না ঘটনোর জন্য ওই শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেন। এদিকে দুপুরেই হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ন মহাসচিব মাও.নাছির উদ্দিন মুনির স্থানীয় হেফাজত নেতাকর্মীদের নিয়ে ছোট্ট শিশুটিকে দেখে। তার পরিবারকেও শান্তনা দিয়ে বলেন,অপরাধী যে হোক তার শাস্তি অবশ্যই হবে। এমন কর্মকান্ডেরও তীব্র নিন্দা জানান হেফাজতের এই নেতা। তবে একজন ব্যক্তির দোষ সমগ্র মাদরাসা ও আলেম সমাজকে নিয়ে কোন বাজে মন্তব্য বা ষড়যন্ত্র করলে বরদাশ করা হবেনা। হেফাজতের এই নেতার পক্ষ থেকেও দাবি করেন অদূর ভবিৎষতে এমন কর্মকান্ড না ঘটতে মাদরাসা শিক্ষক ও পরিচালকবৃন্দের প্রতি গুরুত্ব সহকারে নজর দিতে অনুরোধ করেন। মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম প্রতিবেদককে জানান, অভিযুক্ত ওই শিক্ষক বিকেল থেকেই পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। শিশু আইনে মামলা রুজুু হয়েছে ও শিক্ষককে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।