প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে উত্তরণের পথে বাংলাদেশ আরো এগিয়ে যাবে। আজ ২৩ মার্চ বিশ্ব আবহাওয়া দিবস-২০২১ উপলক্ষ্যে দেয়া এক বাণীতে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নত সমুদ্র পর্যবেক্ষণ ও বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর আরো অধিক দক্ষতার সাথে জলবায়ু ও আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রদান করছে; যা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নকে বেগবান করছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের চলমান প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়িত হলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে পূর্বাভাস ও আগাম সতর্কবার্তা প্রদানে আমাদের সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে উত্তরণের পথে বাংলাদেশ আরো এগিয়ে যাবে। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করে কাঙ্খিত উন্নয়ন অর্জনের জন্য আমরা ‘বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ নামে শতবর্ষের একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব আবহাওয়া দিবস-২০২১’ উদযাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এবারের প্রতিপাদ্য ‘সমুদ্র, আমাদের জলবায়ু ও আবহাওয়া’ বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রাসঙ্গিক ও অর্থবহ বলে আমি মনে করি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করেছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে জলবায়ু ও এর প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সঠিক ও সময়োপযোগী আবহাওয়া ও জলবায়ু পূর্বাভাস প্রদানের ক্ষেত্রে আমাদের সরকারের সময়েই বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আমরা আবহাওয়া আইন-২০১৮ প্রণয়ন করেছি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সরকারের ১২ বছরে ১০টি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ৫টি আবহাওয়া রাডার স্টেশন, গাণিতিক আবহাওয়া পূর্বাভাস পদ্ধতি প্রচলন, ১২টি নতুন আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার, ১৪টি নদীবন্দরে প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার শক্তিশালীকরণ এবং আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। আবহাওয়া পূর্বাভাস জনগণের নিকট সহজলভ্য করার জন্য বিএমডি ওয়েদার অ্যাপ এবং বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় সমুদ্রের আবহাওয়া মনিটরিং সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। কৃষকদের প্রয়োজনে ১০ দিনের আগাম আবহাওয়া পূর্বাভাস প্রদানের জন্য শক্তিশালী কম্পিউটার স্থাপন, স্বয়ংক্রিয় মাটির আর্দ্রতা পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্ক, স্বয়ংক্রিয় বৃষ্টিমাপক অপটিক্যাল নেটওয়ার্ক, কার্বন পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়েছে।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে গত এক দশকে জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপক প্রভাব এবং ঘূর্ণিঝড়, বজ্রঝড়, জলোচ্ছ্বাস, অতিবৃষ্টিসহ অন্যান্য চরম আবহাওয়াগত ঘটনার পরও ক্ষয়-ক্ষতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি, বাংলাদেশ আঞ্চলিক আবহাওয়া ও জলবায়ু সেবা প্রকল্প (কম্পোনেন্ট-এ) এর আওতায় ‘আবহাওয়া তথ্যসেবা ও সতর্কবাণী পদ্ধতি জোরদারকরণ’ জিইও-সিওএমএসএটি স্যাটেলাইট এর ভূ-গ্রাহকযন্ত্র স্থাপন, মেট্রোলজিক্যাল রাডার এ্যাট ঢাকা এন্ড রংপুর উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। বিশ্ব আবহাওয়া দিবস পালনের মাধ্যমে দেশের জনগণের মধ্যে আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক সচেতনতা আরো বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী ‘বিশ্ব আবহাওয়া দিবস-২০২১’ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেছেন।