পটুয়াখালীর দশমিনায় সূর্যমুখীর বাম্পার ফলন হয়েছে। গাছে গাছে ফুটেছে ফুল। এ যেন এক ফুলের স্বর্গরাজ্য। সবুজে ঘেরা প্রকৃতির মাঝে হলুদ রঙের সূর্যমুখী দূর থেকে যে কারো মনকেড়ে নেবে। তাই সূর্যমূখী মাঠে দর্শনার্থীদের পদচারণা বেড়েছে। মাঠে কৃষকের স্বপ্ন সূর্যমুখী ফুলে রঙিন হয়েছে। সূর্যমুখীর বাম্পার ফলন গ্রামীণ অর্থনীতিতে সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে। সূর্যমুখী দেখতে রূপময় নয় গুণেও অনন্য। সূর্যমুখীর বীজের তেল স্বাস্থ্যর জন্য অসাধারণ। অন্যান্য তেলবীজে যেসব ক্ষতিকারক উপাদান থাকে সূর্যমুখীতে তা নেই। বরং আরও উপকারী উপাদান ও পুষ্টিগুণ বিদ্যমান। কৃষিতে একের পর এক বিপব সৃষ্টি করছে বর্তমান সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় কৃষিতে সাফল্যে মুজিববর্ষের অঙ্গীকার হিসাবে সূর্যমুখী চাষে নতুন স্বপ্ন দেখছে কৃষক। আর্থিকভাবে লাভবানের হাতছানি দিয়েছে কৃষকদের কাছে সূর্যমুখী। সূর্যমুখী ফুলের বীজ থেকে সহজে উন্নত মানের তেল ও খৈল উৎপাদন হয়। পাশাপাশি পুষ্টিকর সবজি হিসেবেও সূর্যমুখী জনপ্রিয়। সেই সাথে জ্বালানির চাহিদা পূরণেও ভূমিকা আছে। উপজেলার কৃষি অফিস সূত্র মতে, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ৬০হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় দেড়গুন বেশি। সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী কৃষকরা সরকারিভাবে পেয়েছেন বীজ ও সার। এবার যে সকল কৃষক সূর্যমুখী চাষ করেছেন সেই সকল কৃষক আগামী আউশ ও আমন মৌসুমেও সরকারের প্রণোদনার সুযোগ পেতে যাচ্ছেন। সূর্যমুখী বীজ রোপণের ৪ মাসের মধ্যে কৃষকেরা ফুল থেকে বীজ ঘরে তুলতে পারেন। প্রতি হেক্টরে ১.৮-২ টন বীজ পাওয়া যায়। কৃষক ২৬শ’ টাকা দরে বীজ বিক্রি করতে পারবে। সূর্যমুখীর প্রতিকেজি বীজ আধা লিটার তেল উৎপাদন সম্ভব। কৃষকের সূর্যমুখীর চাষের উপর দেয়া হয়েছে প্রশিক্ষণ। বাজারে তেলের চাহিদা পূরণ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে সূর্যমুখীর তেল। এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। আর দারিদ্র্য বিমোচনে সূর্যমুখী চাষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সরকারিভাবে কৃষি বিভাগের পক্ষে কৃষকদের সূর্যমুখী চাষ প্রণোদনা আওতায় সূর্যমুখী আবাদ সম্প্রসারণ করা হয়েছে। কারণ সূর্যমুখীর ফলও বীজ দুটোই বিক্রিযোগ্য। উপজেলার নিজাবাদ গ্রামের সূর্যমুখী চাষি মোঃ মানিক হাওলাদার জানান, সুর্যমুখী আবাদ এইবারই প্রথম করছেন তিনি । এটি নতুন স্বপ্ন তার। সূর্যমুখীর যে ফুল এসেছে তা দেখে ভালো ফলনের আশা করছেন এই উদ্যোক্তা। তিনি চান সূর্যমুখী তেলের কারখানা গড়ে উঠুক আর সেখানে এ উপজেলার কৃষকরা সেখানে বীজ বিক্রি করে লাভবান হোক। আরেক কৃষক কাজী কামাল জানান, সূর্যমুখী চাষে কম খরচে বেশি লাভ। ফলন ভালো হলে অন্যান্য আবাদের চেয়ে সূর্যমুখী অনেক লাভজনক। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাফর আহাম্মেদ বলেন, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ব্যাপক সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। সূর্যমুখী চাষের জন্য আবহাওয়া ও মাটি অত্যান্ত উপযোগী। ফলে চলতি বছরেও সরকারি প্রণোদনায় কৃষকদের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে সূর্যমুখী চাষ বাড়ানো হয়। এটি একটি ভালো তেল ফসল।