সিরাজদিখানে হরতাল-সংঘর্ষ
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে হেফাজতে ইসলামের হরতালকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে দলটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও ওসিসহ শতাধিক আহত হয়েছেন। রোববার হরতালের সমর্থনে উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের নিমতলা শিকারপুর এলাকায় মিছিল ও পিকেটিংয়ের সময় এ সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর আব্দুল হামীদ, সিরাজদিখান থানার ওসি এস এম জালাল উদ্দীন, সেকেন্ড অফিসার সেকান্দর আলীসহ হেফাজতের বিভিন্ন নেতা-কর্মী ও মধুপুর মাদরাসার শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে অবস্থান নেয় হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা। তারা প্রায় ২ ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে রাখেন। এ সময় কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর আব্দুল হামীদের নেতৃত্বে আরেকটি অংশ শিকারপুর সড়কে অবস্থান নেয়। দুপুর ১২টার দিকে মহাসড়ক ছেড়ে শিকারপুর রোডে চলে আসেন হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সিরাজদিখান থানার ওসির ওপর হামলা করে দলটির কয়েকজন কর্মী। ওসিকে উদ্ধারের পরে পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও ফাঁকা গুলি চালায়। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা হরতাল সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সকালে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের কুচিয়ামোড়া ও নিমতলি এলাকায় অবস্থান করে অবরোধের চেষ্টা করছিল হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দেন। এরপর নিকটস্থ বড় বড়শিকারপুর ও শুলপুর এলাকায় হেফাজতের নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। ইট-পাটকেল ছুঁড়ে আহত করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে বেশকয়েকটি দোকানপাট ভাংচুর, তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এ ছাড়া একটি অটোরিকশা ভাংচুর করে নেতা-কর্মীরা। পরে হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামে ইউনিয়ন আ’লীগ ও যুবলীগ সভাপতির বাড়িঘর ভাংচুর করে। তাদের বাড়ির নারী সদস্যদেরও মারধর করে।
হেফাজতে ইসলামের সিরাজদিখানে উপজেলার সভাপতি মাওলানা ওবাইদুল্লাহ কাসেমী বলেন, পুলিশের গুলি ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের হামলায় মাদরাসার শতাধিক ছাত্র আহত হয়েছেন। হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর আব্দুল হামীদ পীর সাহেব মধুপুরি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন জানান, সিরাজদিখান থানার ওসির মাথা ফেটে গেছে। আরো কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বিস্তারিত জেনে বলা যাবে।