পুষ্টিগুণে ভরপুর ও আশঁজাতীয় সবজি সজিনার ভারে হেলে পড়েছে সজিনার গাছ গুলো। প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের বাড়ির পাশের অনাবাদি ও পতিত জমিতে সজিনা চাষ করে পুষ্টির পাশাপাশি আর্থিক ভাবেও লাভবান হচ্ছেন জেলার কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার সজিনার বাম্পার ফলনের আশ করছেন এলাকার কৃষক ও কৃষি বিভাগ।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও কৃষি অফিস সূত্র বাসস’কে জানায়, জয়পুরহাট জেলায় এবার ১ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে সজিনা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা কয়েছে। এতে সজিনার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৫শ’ মেট্রিক টন। সদর উপজেলার মোহাম্মাদাবাদ, বম্বু, ভাদসা, দোগাছী ও ধলাহার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় বাড়ির পাশের অনাবাদি ও পতিত জমিতে বারোমাসি সজিনার চাষ হচ্ছে। এ ছাড়াও কালাই উপজেলার মাত্রাই, উদয়পুর, পুনট, জিন্দারপুর ও আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অকৃষি বা পতিত জমিতে হাইব্রিড, বারোমাসি ও দেশী জাতের সজিনার চাষ হচ্ছে। বাসাবাড়ির আশে পাশে, পুকুর পাড়ে, ছাদে ও হাসপাতাল, স্কুল, কলেজের মাঠে এবং রাস্তার দু’পাশে অকৃষি বা পতিত জমিতে পুষ্ঠিগুণে ভরপুর ও আশঁজাতীয় সবজি সজিনার সারি সারি গাছগুলো এখন সজিনার ভারে হেলে পড়ছে এলাকায়। জেলায় সাজনা চাষ দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে । এখান কার সজিনা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে বলে জানান স্থানিয় কৃষক দেলোয়ার হোসেন। এ ছাড়া সজিনা বিক্রি করে অনেকেই অর্থিক ভাবেও লাভবান হয়েছেন। সজিনা চাষ ইতোমধ্যেই অর্থকরি ফসল হিসেবে সকলের কাছে বিবেচিত হচ্ছে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে এবার সজিনা বাম্পার ফলন হবে বলে আশ করছেন এলাকার সজিনা চাষীরা।
সদর উপজেলার কাশিয়াবাড়ি এলাকার সজিনা চাষী মো: দেলোয়ার হোসেন বলেন, বাড়ির সমনে রাস্তার দু’ধারে ১০টি সজিনার গাছ লাগানো হয়েছিল। গত বছর ওইসব সজিনার গাছ থেকে প্রায় ৬ মণ সজিনা বিক্রি করা হয়েছে। আশা করছি এবারও সজিনার বাম্পার ফলন পাব। বাজারে প্রথম দিকে ১শ টাকা কেজি সজিনা বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি।
জয়পুরহাটের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা: মনিরুজ্জামান মানিক বলেন, সজিনা পুষ্ঠিগুণে ভরপুর সবজি। সজিনার মধ্যে ভিটামিন-এ ও সি আছে। এটি মানব দেহের কোলেষ্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সজিনা উচ্চরক্ত চাপের রোগীদের অনেক উপকারী। তাছাড়া সজিনার পাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায়।
সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ কায়সার ইকবাল বলেন, সজিনা একটি পরিবেশবান্ধব ও অর্থকরি আশঁজাতীয় সবজি। এটি বাড়ির পাশের অনাবাদি ও পতিত জমিতেও চাষ করা যায়। সজিনা চাষে পানির খরচ কম লাগে। বাজারে দামও ভালো পাওয়া যায়। সজিনা গাছের তেমন কোন রোগ-বালাই নেই বললেই চলে এবং অন্যান্য খরচও নেই। একটু পরিচর্যা করলেই অনেক ভালো ফলন পাওয়া যায় বলে জানান কায়সার ইকবাল।