লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের মেঘনা নদীতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবাধে চলছে জাটকা নিধনের মহোৎসব। স্থানীয় অসাধু মৎস্য ব্যাসায়ীদের সঙ্গে জোট বেধে কিছু জেলে দ্রুতগামী ইঞ্জিনচালিত নৌকার সাহায্যে রূপালী ইলিশ ধংস করছেন। এ কাজে হরহামেসা ব্যবহৃত হচ্ছে নিষিদ্ধ কারেন্টন জাল। এবার জাটকার মৌসুমে প্রচুর জাটকা ধরার কারণে ইলিশ উৎপাদনে ধস নামতে পারে বলে আশংকা করছেন মৎস্য বিশেষজ্ঞরা। এতে চলতি বছর সরকারের কাঙ্খিত ইলিশ উৎপাদন ব্যহত হওয়ার আশংকা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, পাশর্^বর্তী মেঘনা নদীর চরভৈরবী, জালিয়ারচর, মেঘনা বাজার, বাবুর চর, হাজিমারা, কানিবগা, চরঘাসিয়া, চরলক্ষ্মী, পুরান বেড়ি, চান্দার খাল এলাকায় ব্যপক হারে জাটনা নিধন চলছে। প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে উপজেলার বিভিন্ন মাছ ঘাটের নদী এলাকায় দেখা গেছে জাটকা বিক্রির ধুম। মৎস্য বিভিাগ আর কোস্টগার্ডের দায়সারা কাজকেই দোষারপ করছেন সচেতন মহল। অভিযোগ রয়েছে কোস্টগার্ডের দায়সারা কাজের কারণে চরভৈরবীর রুহুল আমিন মেম্বার ও তাঁর ছেলে বিল্লাল হোসেনের তত্বাবধানে একটি সিন্ডিকেট মাছ শিকারে কাজ করছে। এ সিন্ডিকেটে রায়পুরে মেঘনা নদীর গজারিয়া গ্রামের এবং কোস্টগার্ডের মাঝি জহিরুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর মাঝি জড়িত রয়েছে। নদীতে মাছ শিকারের পর একটি ভাগ কোস্টগার্ডকে দেওয়া হয় বলে স্থানীয়রা দাবী করছেন। তবে রুহুল আমি মেম্বার ও উল্লেখিত মাঝিদের ব্যাপারে মাঝ ধরা ও বিক্রির বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে এক দায়িত্বশীল সূত্র জানায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন নদীতে মাছ শিকারের দায়ে কারাদন্ড বা অর্থদন্ড এবং উভয় দন্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। সেক্ষেত্রে সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারী করতে মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড, পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি নদী এলাকার ইউপি প্রশাসনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু এ দায়িত্ব কেউই ঠিকমতো পালন করছে না। সবাই দায়সারাভাবে কাজ করছে। চলতি পথে কাউকে মাছ ধরতে দেখা গেলে শুধু তাদের জন্যই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এদিকে চরভৈরবীর রুহুল আমিন মেম্বারসহ একটি সিন্ডিকেটের নৌকা রায়পুরে ঢুকে মাছ শিকার করছে বলে জানান উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আবুল হোসেন হাওলাদার। তাদের সাথে কোস্টগার্ডের দুই মাঝি জড়িত রয়েছেন বলেও তিনি জানান। জানতে চাইলে কোস্টগার্ডের রায়পুর (হায়দরগঞ্জ) ক্যাম্পের কন্টিনজেন্ট কামান্ডার মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, “জাটকা সংরক্ষণে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কার নৌকা কখন মাছ শিকার করতে যায়, সেটা আমরা জানিনা। অভিযান চালিয়ে যাকেই নদীতে দেখতে পাই সঙ্গে সঙ্গে তাদেরকে আটক করা হয়। ইতিমধ্যে অভিযান চালিয়ে অনেক নৌকা, জাটকা, জেলে এবং কয়েক লাখ মিটার কারেন্টজাল আটক করা হয়েছে।