দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরো ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনা মহামারীতে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়ে এটিই একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। এর আগে গেল বছরের ৩০ জুন সর্বোচ্চ ৬৪ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯ হাজার ৩৮৪ জন। একই সময়ে নতুন করে আরো ৭ হাজার ২১৩ জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হিসাবে এটিই এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত। এ নিয়ে টানা তৃতীয় দিন ৭ হাজারের উপরে রোগী শনাক্তের তথ্য জানাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গতকাল মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
দেশে গেল বছর ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের তথ্য জানায় সরকার। সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মাত্র ৩ মাসের মাথায় দৈনিক শনাক্ত ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ে। এরপর গেল ডিসেম্বর থেকে তা কমতে থাকে। এমনকি একসময় দৈনিক শনাক্ত ৩০০-রও নিচে নেমে আসে। এরই মধ্যে দেশে করোনার টিকাকরণও শুরু হলে কিছুটা স্বস্তি নামে। তবে এই স্বস্তি খুব বেশিদিন টেকেনি। দেশে সংক্রমণের যখন একবছর হতে চলেছে, ঠিক সেসময় ফের নতুন করে বাড়তে শুরু করে সংক্রমণ। তা ভয়াবহ আকারে বাড়ছেই। প্রায় প্রতিদিনই ছাড়িয়ে যাচ্ছে আগের দিনের সংক্রমণের সংখ্যা। এরই মধ্যে গতকাল সোমবার থেকে সাতদিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। আজকের বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে মোট ২২৭টি ল্যাবে ৩৪ হাজার ৩১১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪৮ লাখ ৪৭ হাজার ৯৩৫টি নমুনা। এ দিকে গেল ২৪ ঘণ্টায় আরো ২ হাজার ৯৬৯ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ নিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৩৮৩ জন হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ০২ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
গেল ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৩৯ জন পুরুষ ও নারী ২৭ জন। এদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন বাড়িতে, বাকিদের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মৃতদের ৪১ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ১৭ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ৫ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর এবং ১ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল। আর এলাকাভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মৃতদের মধ্যে ৫৪ জন ঢাকা বিভাগের, ৪ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩ জন রাজশাহী বিভাগের, ২ জন করে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের এবং ১ জন সিলেট বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।