নরসিংদীর মনোহরদীতে রোরো ধান ক্ষেতে ছত্রাকজনিত রোগ ব্লাস্ট (ধানের গলাপচা) এবং প্রতিকুল আবহাওয়ার কারণে ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। চলতি বোরো মৌসুমে ধান বের হওয়ার শুরুতে এই সংক্রমণে ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে। এই নিয়ে কৃষি বিভাগ রোগ প্রতিরোধে সঠিক মাত্রায় ছত্রাকনাশক ছিটানোসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিলেও কৃষকের দুশ্চিন্তা কাটছে না। ধানের ফলন ভালো হলেও হঠাৎ দিনের বেলায় অত্যাধিক গরম এবং রাতে ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। বুধবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অনেক জমির বোরো ধান সাদা হয়ে গেছে। ধানের জমি গুলোতে আধা পাকা ধানের গোড়া পচে গিয়ে শিষ শুকিয়ে ভেতরে চিটা হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে মনোহরদী উপজেলায় ১০ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। ফসলের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৩৬৬ মেট্রিক টন। তবে ক্ষতির পরিমাণ এখনো নির্ধারণ হয়নি। আবহাওয়ার কারণে ব্রি-২৮ ও হাইব্রিড জাতের ধান বেশি নষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস। শুকুন্দী বালিয়াকান্দা গ্রামের কেফায়েত উল্লাহ নামের এক কৃষক জানান, ‘প্রথমে দু-একটি ধানের গোড়ায় পচন দেখা দিয়েছিল। পরে একের পর এক জমির ধানের গোড়ায় এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ওষুধ ছিটিয়ে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও তা পুরোপুরি ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না।’ কৃষক মু. ইসমাইল হোসেন বলেন,‘শুরুতে ফলন বেশ ভালো হয়েছে। নিয়মিত ক্ষেতে গিয়ে কোন রোগ দেখতে পাইনি। কিন্তু হঠাৎ একদিন দেখি, ধানের শিষ সাদা হয়ে যাচ্ছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুরো জমিতে এ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে অনেক ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছিলেন। কিন্তু তেমন কোনো প্রতিকার পাননি।’ মনোহরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার বলেন,‘ধান খেত হঠাৎ সাদা হয়ে যাওয়া এবং চিটা হওয়াটা কোন রোগ না। কয়েকদিন আগে হঠাৎ বয়ে যাওয়াগরম বাতাসের কারণে এই অবস্থা হয়েছে। তাছাড়াএখন দিনের বেলায় অত্যাধিক গরম, আর রাতে ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণেওবোরো ধান নস্ট হয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো জানান, ‘কিছু কিছু খেতে ব্লাস্ট রোগ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি এবং উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে কৃষকদের ব্লাস্ট রোগ এবং প্রতিকুল আবহাওয়ার কারণে ধানের ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’