দুর্গাপুর উপজেলায় ফসলের মাঠে দুলছে বোরো ধানের সোনালী শীষ, কৃষকের চোখে হাজারও স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন আচমকা হানা দিয়েছে কালবৈশাখীর গরম ঝড়ো হাওয়া। মুহুর্তেই শেষ করে দিয়েছে হাজারো কৃষকের স্বপ্ন। আচমকা গরম বাতাস ও বৈশাখী ঝড়ো হাওয়ায় বোরো ধানে ব্যাপক ক্ষতি দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার গাওকান্দিয়া, কুল্লাগড়া, দুর্গাপুর, কাকৈরগড়া, চন্ডিগড়, বিরিশিরি, ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভবনা থাকলেও গরম ঝড়ো হাওয়ায় মাঠের ধানের শীষগুলো সাদা হয়ে মাটিতে মিষে গেছে ধান গাছ গুলো। এতে আটাশ জাত ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। হতাশায় পড়েছে কৃষকেরা। কুল্লাগড়া ইউনিয়নের কামারখালী গ্রামের আদিবাসী কৃষক কোয়েল বলেন, জীবনেও আমি এমন গরম বাতাস দেখিনাই। সকালে উঠে দেখি খেতের ধান সব মরে গেছে। আমরা কী খেয়ে বাঁচব, আমাদের তো কৃষি ছাড়া আর কোন উপায় নেই। ঋণ করে গৃহস্থি করেছি। এখন কি করে ঋণ দেব? কীভাবে সারা বছর স্ত্রী, সন্তানের ভরণপোষণ করব? খেতের পর খেত সব নষ্ট হয়ে গেছে। পরিদর্শন কালে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম, একাডেমিক সুপারভাইজার মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন, ইউপি সদস্য, উপ-সহকারী কৃষিকর্মকতাগন সহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিগন উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, গত ৫ এপ্রিল আকস্মিকভাবে গরম বাতাস একটি প্রাকৃতিক দূর্যোগ। এ বছর অত্র উপজেলায় ১৭ হাজার ৬শত হেক্টর জমি আবাদ হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা পর্যবেক্ষন করে দেখেছি প্রায় ১হাজার ৫শত হেক্টরের মতো ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। পৌরসভাসহ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগন মাঠে জরিপের কাজ অব্যাহত রেখেছেন। আপাততঃ কৃষকদের জমিতে সার্বক্ষনিক পানি রাখার পরামর্শ সহ তাদের সাথে আমাদের যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান এ প্রতিনিধি কে বলেন, এটা একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ইতোমধ্যে কৃষি অফিসার সহ অন্যান্য অফিসারদের নিয়ে মাঠের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের সাথে কথা বলেছি। প্রকৃত ক্ষতির পরিমান নির্নয় করার জন্য উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উর্দ্ধতন মহলে কৃষি প্রনোদনার জন্য আবেদন জানানো হবে।