ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় থানা, পুলিশ ফাঁড়িসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হেফাজতে ইসলামের তা-বের পর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা পুলিশ। পুলিশের অধীনস্থ সব স্থাপনায় ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করতে অন্তত ২৭টি লাইট মেশিনগান পোস্ট (এলএমজি) স্থাপন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) রইছ উদ্দিনও। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৬, ২৭ ও ২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের সহিংস ও ধ্বংসাত্মক কর্মসূচির প্রেক্ষাপটে জেলার বিভিন্ন থানা, ফাঁড়িসহ পুলিশের অন্যান্য স্থাপনায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এলএমজি চেকপোস্ট স্থাপন করা থানাগুলো হলো- ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা, আশুগঞ্জ, সরাইল, নাসিরনগর, নবীনগর, বাঞ্ছারামপুর, কসবা, আখাউড়া, বিজয়নগর।
পুলিশ ফাঁড়ি ও তদন্তকেন্দ্রগুলো হলো- ১নং শহর পুলিশ ফাঁড়ি, ২নং শহর পুলিশ ফাঁড়ি, ইসলামপুর পুলিশ ফাঁড়ি, ধরখার পুলিশ ফাঁড়ি, চাতলপাড় তদন্ত কেন্দ্র, আউলিয়া বাজার তদন্ত কেন্দ্র। ছয়টি পুলিশ ক্যাম্প- সার কারখানা পুলিশ ক্যাম্প, পিডিবি পুলিশ ক্যাম্প, টোলপ্লাজা পুলিশ ক্যাম্প, শিবপুর পুলিশ ক্যাম্প, ছলিমগঞ্জ পুলিশ ক্যাম্প, চম্পনগর পুলিশ ক্যাম্প।
এছাড়া জেলা পুলিশ লাইন্সে চারটি ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে একটিসহ মোট ২৭টি এলএমজি চেকপোষ্ট স্থাপন করা হয়েছে। এসব নিরাপত্তা পোস্টে আধুনিক ও ভারি অস্ত্রসহ প্রশিক্ষিত পুলিশ সদস্যদের নিয়োজিত করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, প্রত্যেকটি থানা, ফাঁড়ি ও ক্যাম্পে ইতোমধ্যেই জনবল বৃদ্ধিসহ পর্যাপ্ত অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক প্রেক্ষপটে কোনো দুষ্কৃতিকারী যেন পুলিশ স্থাপনায় হামলা বা সহিংস ঘটনা ঘটাতে না পারে সেজন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিয়মিত মনিটরিংয়েল ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) রইছ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম যে তা-ব ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চালিয়েছে, তাতে পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায়ও রক্ষা পায়নি। এজন্য আমরা পুরো শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি পুলিশের স্থাপনাগুলোতেও বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। যেন পুলিশের স্থাপনাগুলো আক্রান্ত না হয়। কারণ পুলিশ আক্রান্ত হলে সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পারবে না। পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা বহাল থাকবে।’ পুলিশের স্থাপনায় ফের হামলার কোনো তথ্য আছে কি-না এমন প্রশ্নে রইছ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা কিছুদিন আগে যে ঘটনা দেখেছি, তা থেকেই মূলত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। তারা (হেফাজত কর্মীরা) থানায় আক্রমণ করেছে, ফাঁড়িতে আক্রমণ করেছে, পুলিশ অফিসে হামলা করেছে। সুতরাং এখন ম্যাসেজ পাওয়ার অপেক্ষায় থাকার আর সুযোগ নেই। ভবিষ্যতে তারা যেন এ ধরনের কাজ না করতে পারে, সেজন্যই এই ব্যবস্থা নেয়া।’ এর আগে সিলেটের ১৭টি থানাসহ পুলিশ ফাঁড়ি ও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র এবং নারায়ণগঞ্জের সব থানা, ফাঁড়ি, তদন্তকেন্দ্র ও স্থাপনাগুলোতে ২০টি এলএমজি পোস্ট স্থাপনের তথ্য জানিয়েছে স্ব স্ব জেলা পুলিশ।