সরকারের কঠোর বিধি-নিষেধের মধ্যেও সূচকের বড় উত্থান হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। শুধু তাই নয়, দিন শেষে বেড়েছে লেনদেনও। মূল্য সূচকের বড় উত্থানে নেতৃত্বের ভূমিকায় ছিল মিউচুয়াল ফান্ডগুলো। নিয়ন্ত্রক সংস্থার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় শেয়ারবাজরে লেনদেন শুরু হয়। শুরুতেই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রায় সবকটি মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বেড়ে যায়। সেইসঙ্গে অন্যান্য খাতেরও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ে। ফলে ঊর্ধ্বমুখী হয় সূচক।
মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩৭টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৬টিই দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে একটির। আর সব খাত মিলে ২১৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯০টির। আর ৪৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসই-এক্স আগের দিনের তুলনায় ৫১ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৩১০ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ২৯ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসইর শরিয়াহর সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ২০৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
মূল্য সূচকের উত্থানের সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৫৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৫১১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৪৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৮৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২২৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬১টির এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, মহামারি করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়ায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। এই কঠোর বিধিনিষেধ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে ব্যাংক বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়। যে কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও এই সময়ে ব্যাংক বন্ধের নির্দেশনা দেয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে শেয়ারবাজারের লেনদেনও বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বিশেষ প্রয়োজনে ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ব্যাংক লেনদেনের সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংক খোলার সিদ্ধান্ত আসার পর পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে। বিএসইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কঠোর লকডাউনের মধ্যে সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শেয়ারবাজারে লেনদেন চলবে।