হেফাজতে ইসলামের নেতাদের সব মামলা প্রত্যাহার করে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছে বিএনপি। এ সময় ধর্মীয় রাজনৈতিক নেতাসহ বিরোধী নেতাদের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় বিএনপি। গতকাল সোমবার দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভার বিষয়ে সাংবাদিকদের অবগত করার জন্য ঢাকা ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আপনারা লক্ষ্য করেছেন কয়েক দিন ধরে লকডাউনের সুযোগ নিয়ে একটি ক্র্যাকডাউন করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে একদিকে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। সেই গ্রেফতারের সংখ্যা অলরেডি ৩০০ পার হয়ে গেছে। অন্যদিকে ধর্মীয় নেতা, যারা আলেম ওলামা আছেন তাদেরকে নির্বিচারে গ্রেফতার করা হচ্ছে। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনকভাবে যারা খুব শ্রদ্ধেয় মানুষ, যে সকল আলেমরা এদেশের মানুষের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, ২৬ মার্চ কেন্দ্র করে যে ঘটনাগুলো সংঘটিত হয়েছে এর আগেও বলেছি এগুলো সরকারের তৈরি করা। সরকার খুব পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনাগুলো যেন ঘটে ওই ব্যবস্থা করেছে। আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন ২৬ মার্চ কয়েকটি ধর্মীয় সংগঠন, একই সাথে কয়েকটি রাজনৈতিক সংগঠন তারা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে উপলক্ষ্য করে বিরোধিতা করেছিল এবং বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছিল। আমরা যেটা দেখেছি বায়তুল মোকারমের যে বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল তা শান্তিপূর্ণ ছিল। এটাকে অশান্তিপূর্ণ করে দেয়ার জন্য পুলিশের সবচেয়ে বড় ভূমিকা, তারপরে আওয়ামী লীগের দলীয় সন্ত্রাসীরা আক্রমণ চালিয়ে এটাকে অশান্তিপূর্ণ করে দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এ কারণেই কিন্তু হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ ঘটনাগুলো সংঘটিত হয়েছে। এই কথাগুলো কিন্তু তারা কখনোই বলছে না। তারা এই ঘটনাগুলোর জন্য এই সকল ধর্মীয় সংগঠনগুলো, বিশেষ করে বিএনপির ওপর বারবার দোষ চাপাচ্ছে। আমরা খুব স্পষ্ট ভাষায় বলেছি এবং এখনো বলছি যে, আমাদের ওই ঘটনাগুলোর সাথে কোনো সম্পর্ক ছিলো না। আমরা প্রতিবাদ করেছি, আমরা বিক্ষোভ করেছি অবশ্যই যখন বিনা বিচারে মানুষকে হত্যা করে স্বাধীনতার ৫০ বছরে সুবর্ণজয়ন্তীকে কলুষিত করা হয়েছে।
মির্জা ফাখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের গণতন্ত্রের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। তারা এখন গণবিচ্ছিন্ন দল। তারা এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং বিচার বিভাগের ওপর ভর করে টিকে আছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই এ ধরনের ধর্মীয় নেতাদের অপমান করা, তাদেরকে হয়রানি করা এদেশের মানুষ কোনোভাবে মেনে নেবে না। আমরা আহ্বান করবো অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়া হোক এবং পাশাপাশি বিএনপি যে সকল নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদেরকেও অনতিবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়া হোক।