কুষ্টিয়ার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গড়াই নদী আজ মৃত প্রায় অবস্থা। বসন্ত শেষ হতে না হতেই পানির প্রবাহ নেই গড়াই নদীতে। প্রমত্তা গড়াই এখন পরিনত হয়েছে ছোট খালে। গড়াই রেল ও সড়ক সেতুর অধিকাংশ পিলার চরে আটকে গেছে। সেই সাথে নেমে গেছে পানির স্তর। এর প্রভাবে কুষ্টিয়া পৌর এলাকসহ আসে পাশের অধিকাংশ নল কুপে উঠছে না পানি। এমনকি পৌরসভার থেকে দেওয়া সাপ্লাই পানির ও উৎপাদন কমে গেছে। পানির স্তর নেমে যাওয়ায় নদীর এমন করুন পরিনতির কারনে এখানকার মানুষের পাশা পাশি জীব-বৈচিত্র পড়েছে হুমকীর মুখে। পানির জন্য চলছে হাহাকার। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, বেশ কয়েক মাস বৃষ্টি নেই। প্রাকৃতিক এই সমস্যা সমাধানে তাদের কিছুই করার নাই। তবে বৃষ্টি হলে অবস্থার পরিবর্তন হবে। কুষ্টিয়া পৌরসভার দেয়া তথ্য মোতাবেক পৌর এলাকার ২১টি ওয়ার্ডে হোল্ডিং সংখ্যা ৩৭ হাজার, যার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই নিজস্ব নলকুপ আছে। এছাড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় দেয়া হয়েছে আরো ৪ হাজার ৬শত নলকুপ। পানির স্তর নেমে যাওয়ার কারনে এসব এলাকার প্রায় সব নলকুপই হয়ে গেছে অকেজো। যেগুলো কাজ করছে সেগুলোতে পানি উঠছে অতি সামান্য। ১ বালতি পানি তুলতে অনেক সময় লাগছে। শুধু পৌর এলাকাই নয়, শহর সংলগ্ন হরিপুর ইউনিয়ন কুমারখালী উপজেলার পৌর এলাকা, কয়া, শিলাইদহ ইউনিয়নসহ নদী তীরবর্তি সব এলাকায় চলছে পানির জন্য হাহাকার। তবে গড়াই নদীর তীরবর্তী বসবাস কর মানুষের অবস্থা সব চাইতে বেশি খারাপ। পানির জন্য নদীর চরে হেটে যেতে হচ্ছে তাদের। এমন সংকটে এর আগে কখনো পড়েননি তারা। কুষ্টিয়া পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, নদীগুলোর নাব্যতা না থাকার পাশা পাশি পানির স্তর বিগত বছরগুলোর তুলনায় ২৫ থেকে ৩০ ফিট নেমে যাওয়ায় হস্ত চালিত নলকুপে উঠছে না পানি। পানি সরবরাহের বিকল্প ব্যবস্থা সক্রিয় না থাকায় বিপাকে পড়েছে জনজীবন। এমনকি পৌরসভার পক্ষ থেকে যে সাপ্লাই পানির ব্যবস্থা করা আছে তার উৎপাদন ও অনেক কম। এটি একটি প্রাকৃতিক সমস্যা। বৃষ্টি শুরু হলেই এই সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে। কুষ্টিয়া পৌর এলাকার বাড়াদি গ্রামের রবিউল ইসলাম, মহিবুল ও নাহারূল এবং মঙ্গলবাড়িয়ার আঃ হান্নান জানান, তারা পানির কষ্টে আছে। মটর বসিয়েও পানি তেমন উঠছেনা। এদিকে পানির স্তর নেমে যাওয়ার পেছনে যত্রতত্র সাবমারসেবল (গভীর নলকুপ) পাম্পের ব্যবহারকে দায়ী করছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, শুস্ক মৌসুমে পানির স্তর নিচে নামার সাথে সাথে নদীর পানিও শুকিয়ে যায়। সেক্ষেত্রে যেসব নলকুপের লেয়ার কম দেয়া সেসব নলকুপে পানি না ওঠারই কথা। এজন্য নতুন নলকুপ স্থাপনের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা মাফিক আরো গভিরে লেয়ার দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।