সাতক্ষীরায় বাঘে ধরা রবিউল শেখের অর্থাভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না । গত ১৩ এপ্রিল বিকেল ৫টার দিকে সুন্দরবনের কাছিকাটা এলাকায় মধু আহরণকালে বাঘের আক্রমণে গুরুতর আহত হন জেলার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর সোরা দৃষ্টিনন্দন গ্রামের হালিম শেখের ছেলে মৌয়াল রবিউল শেখ। সে সময় হালিম শেখ বাঘের মুখ থেকে ছেলেকে ছিনিয়ে আনতে সমর্থ হলেও এখন তার চিকিৎসার খরচ চালাতে আর পেরে উঠছেন না। বাঘের কামড় ও থাবায় শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম নিয়ে কাতরাতে থাকা রবিউলের চিকিৎসা বাবদ প্রতিদিন খরচ হচ্ছে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা। বনজীবী এই পরিবারটির পক্ষে এতো ব্যয় বহুল চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়ে বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা চেয়ে শুধু আশ্বাসই পাচ্ছেন পরিবারটি। এখনো কোনো সরকারি সহায়তাও পাননি তারা। রবিউল শেখের বাবা হালিম শেখ জানান, প্রতিদিন অসংখ্য ইন্টারভিউ দিতে দিতে নাজেহাল হয়ে পড়েছি, সবাই পাশে থাকার আশ্বাস আর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে কোনো সহায়তা পাচ্ছি না। এমন কোনো দিন নেই ২-১০ জনকে ইন্টারভিউ দিচ্ছি না। কিন্তু সহায়তা পাচ্ছি কোথায়? বাড়িতে একজন ডাক্তার সবসময়ের জন্য রেখে দিয়েছি। কিছুক্ষণ পর পর বাঘের কামড়ের এবং থাবার ক্ষতস্থান পরিষ্কার করে দিতে হচ্ছে। প্রতিদিন যে খরচ তা কোনোভাবেই বহন করতে পারছি না। সরকারি সহায়তার আশায় বসে থাকলে অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাবে। সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ বলেন, বৈধভাবে পাশ নিয়ে সুন্দরবনে গিয়ে কোনো বনজীবী নিহত হলে সরকার কর্তৃক তিন লাখ টাকা এবং আহত হলে এক লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়। গাবুরার রবিউলদের ডেকে নিয়ম মেনে আবেদন করতে বলেছি। কিন্তু তারা এখনো কোনো আবেদন কিংবা পরবর্তীতে দেখা করেনি। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে আবেদন জমা দিলে সরকারি সহায়তা পাবে। প্রসঙ্গত, গত ১ এপ্রিল রবিউল শেখ তার বাবা হালিম শেখসহ অন্যান্য মৌয়ালদের সঙ্গে মধু আহরণ করতে সুন্দরবনে যান। ১৩ এপ্রিল (মঙ্গলবার) বিকেল ৫টার দিকে কাছিকাটা এলাকায় মধু আহরণকালে একটি বাঘ রবিউলের উপর হামলে পড়ে। এসময় তার বাবাই তাকে বাঘের মুখ থেকে ছিনিয়ে নেয়। কোনোমতে প্রাণে বেঁচে এলেও তার শরীরের বিভিন্ন অংশ বাঘের কামড় ও থাবায় রক্তাক্ত জখম হয়। তাকে বর্তমানে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।