শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৯ অপরাহ্ন

১ কেজি সজিনা ১২০ টাকা, সফল চাষি খালিদ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৮ মে, ২০২১

পুষ্টি ও ওষুধি গুণাগুণে ভরপুর বারোমাসী সজিনার বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয়েছে ফরিদপুরে। আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে গড়ে তোলা বাগানটি ইতোমধ্যেই দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে। যা ফরিদপুরে এই প্রথম। তাই দূর-দূরান্ত থেকে বাগান দেখতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।
বাণিজ্যিকভাবে সজিনার বাগান খুব একটা চোখে পড়ে না। সজিনা সাধারণত আমাদের দেশে বাড়ির আশপাশে কিংবা পুকুরের চালায় রোপণ করা হয়। সম্প্রতি শহরতলীর হাটগোবিন্দপুর এলাকায় পতিত জমিতে সজিনা চাষ করে সফল হয়েছেন তরুণ উদ্যোক্তা খন্দকার খালিদ বিন মোরশেদ। বীজ বপনের ৬ মাসের মধ্যেই বাজারে সজিনা তুলতে পেরে খুশি তিনি। সজিনা বাগানে কর্মসংস্থান হয়েছে বেকার যুবকদের।
ফরিদপুর পৌরসভার টেপাখোলা মহল্লার বাসিন্দা খন্দকার খালিদ বিন মোরশেদ। নতুন কিছু করার লক্ষ্যে ইউটিউবের মাধ্যমে বারোমাসী সজিনা চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হন। শুরু করেন সজিনা চাষ। ভারতের তামিলনাড়ু থেকে বীজ সংগ্রহ করে ৭১ শতাংশ পতিত জমিতে শুরু করেন চাষ। জমি প্রস্তুত করে ৪৮৫টি বীজ বপন করেন। জৈব সার ব্যবহার করে সামান্য পরিচর্যায় বীজ বপনের ৬ মাসেই প্রতিটি গাছে ফুল আসে।
বর্তমানে বাগানের প্রতিটি গাছে ঝুলছে সজিনা ডাঁটা ও ফুল। গত ২ মাস ধরে নিয়মিত বাজারে বিক্রি করছেন সজিনা। বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় খুশি তিনি। এ বাগানে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে ২ যুবকের। তারাও এখানে কাজ করে লাভবান হচ্ছেন।
কৃষি বিভাগ বলছে, সজনে সম্ভাবনাময় সবজি। এটি চাষে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। সজিনা গাছকে বলা হয় পুষ্টির ডিনামাইট। সজিনা গাছের পাতাকে বলা হয় অলৌকিক পাতা। গবেষকরা সজিনার পাতাকে বলে থাকেন নিউট্রিশন্স সুপার ফুড। এটি পুষ্টি ও ওষুধি গুণাগুণের কারণে সবার প্রিয়। তবে বাংলাদেশে এর বাণিজ্যিক চাষ নেই বললেই চলে।
ফরিদপুরে পরিকল্পিতভাবে, আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে মালচিং পদ্ধতিতে আন্ত ফসলের চাষসহ বারোমাসী সজিনার বাণিজ্যিক বাগান গড়ে উঠেছে। বহু গুণের অধিকারী সজিনা বাতজ্বরের চিকিৎসায় ভূমিকা রাখে। এ ছাড়াও পোকামাকড় কামড়ালে অ্যান্টিসেপটিকের কাজ করে পাতার রস। হৃদরোগ, রক্তের প্রবাহ বৃদ্ধি, শ্বেত, টাইফয়েড, প্যারালাইসিস, লিভার, ত্বক ও চোখের রোগ প্রতিরোধ করে। খালিদ বিন মোরশেদ বলেন, ‘অনেকেই বাগান দেখতে আসছেন। নতুন বাগান তৈরির আগ্রহ প্রকাশ করছেন। প্রতিকেজি সজিনা ৫০-৬০ টাকা পাইকারি বিক্রি করছি। বাজারে এখন ১ কেজি সজিনা বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা। ১০০ শতাংশ জমি থেকে বছরে ২০-৩০ টন সজিনা উৎপাদন সম্ভব। বাগানের পরিচর্যা ও লেবারের বেতনসহ মাসে ১২ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। প্রথম বছরে সাফল্য পেয়েছি। তবে এখনো বাগানের খরচের টাকা উঠাতে পারিনি।’
বাগানের শ্রমিক আলম বলেন, ‘খালিদ এখানে বাগান করার পর থেকেই আমি পরিচর্যার কাজ করছি। এখান থেকে যে টাকা পাই, তা দিয়ে পরিবার নিয়ে ভালোই আছি। আশা আছে, আগামীতে আমরাও এ ধরনের বাগন গড়ে তুলতে পারবো।’
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ আশুতোষ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘সজিনা একটি ম্যাজিক ফসল। এতে সব ধরনের খনিজ পদার্থ আছে। সজিনার পাতা, ফুল, ফল, বাকল ও শিকড় ব্যবহার করা যায়। সজিনা চাষে এ তরুণ উদ্যোক্তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com