অস্বস্তির এই গরমে তাল শাঁস যেন একটুকু স্বস্তির ছোঁয়া। তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানিশূন্যতা দূর করার দরুন প্রচন্ড তাপদাহে হাটহাজারীতে বেড়েছে তাল শাঁসের কদর। মধু মাস জ্যৈষ্ঠের এ গরমে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে সাইজভেদে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে এসব তাল শাঁস। আবার কোনো কোনো ব্যবসায়ীরা ভ্যানযোগে পাড়া-মহল্লার বিভিন্ন অলিগলিতে বিক্রি করছেন ভিটামিন এ, বি ও সি সমৃদ্ধ সুস্বাদু এই তাল শাঁস। শুরুতে দাম একটু চড়া থাকার কারণে শুরুর দিকে স্বল্প আয়ের মানুষজন শাসঁ না কিনলেও দাম কমার পর সব শ্রেণির মানুষ সুস্বাদু নরম তাল শাসেঁর স্বাদ নিয়ে থাকেন। পুষ্টিবিদদের মতে প্রতি ১০০ গ্রামের একটি তাল শাঁসের মধ্যে রয়েছে ৯৩.৩ শতাংশ জলীয় অংশ, ক্যালরি ২৯ গ্রাম, শর্করা ৬.৫ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৪৩ মিলিগ্রাম, খনিজ ০.৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৪ মিলিগ্রাম। এসব উপাদান শরীরকে নানা রোগ থেকে রক্ষা করাসহ রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। উপজেলার, চৌধুরীহাট, নজুমিয়াহাট, সরকারহাট, কাটিরহাট, হাটহাজারী পৌর সদরের কলেজ গেইট, হাটহাজারী বাস ষ্টেশন, হাটহাজারী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রচন্ড গরমে দুর্বিসহ হয়ে ওঠা জীবনে একটু স্বস্তির ছোঁয়া পেতে ক্রেতা সাধারণ তাল শাসের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। বাজারে আসা ক্রেতাদের হাতে হাতে শোভা পাচ্ছে তাল শাঁস। ক্রেতা-বিক্রেতার দরকষাকষির মধ্য দিয়ে চলছে শাঁস বিক্রির রমারম ব্যবসা। সাইজ ভেদে প্রতিটি তাল শাঁস ৫ থেকে ১০ টাকা কিংবা প্রতিটি তাল ১০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কালের বিবর্তন আর নগরায়নের ফলে দিন দিন কমে যাচ্ছে তাল গাছ। উপজেলায় তাল গাছ থাকলেও চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বলে অধিকাংশ তাল আসে আশে পাশের উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে। সরকারহাটে তাল শাস কিনতে আসা কাজী জসিম উদ্দিন জানান, জ্যৈষ্ঠ মাসের অনেক ফল ফরমালিনের ছোঁয়ায় বিষে নীল। তবে তাল দীর্ঘদিন রাখলেও নষ্ট হয় না বিধায় তালে ফরমালিন মেশানো হয় হয় না। তাই তিনি মনে করেন এখন তাল শাঁস খাওয়ার উপযুক্ত সময়। একই এলাকার তাল বিক্রেতা ফারুখ জানান, গ্রাম অঞ্চল ঘুরে ঘুরে তাল ক্রয় করে গাছ থেকে পেরে এনে শাস বিক্রি করেন তিনি। জ্যৈষ্ঠ মাস জুড়ে চলবে তাল শাস বিক্রির কাজ। প্রতিদিন গড়ে ১৩০ থেকে ১৫০টি তাল বিক্রি করে তিনি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা আয় করেন।