কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর একটি ইউনিয়ন পরিষদে ৫ দিন যাবত তালা ঝুলছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেই তালা খোলার উদ্যোগ না নেয়ায় পরিষদের সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে আসা সেবা গ্রহীতারা। তাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। অভিযোগ রয়েছে সাময়িক বরখাস্ত চেয়ারম্যানের সমর্থকরা স্থানীয় প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ তালাবদ্ধ করে রেখেছে। জানাগেছে চলতি বছর ১৭ জানুয়ারী স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমানকে এলাকায় গণউপদ্রব সৃষ্টি এবং মামলার কারণে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এরপর থেকে প্যানেল চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যান হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করলে আদালত চেয়ারম্যানের বরখাস্ত আদেশ ৬ মাসের জন্য স্থগিতের রায় প্রদান করে। নিয়মানুযায়ী হাইকোর্টের আদেশ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পৌঁছলে মন্ত্রণালয় জেলা প্রশাসককে যে নির্দেশনা দিবেন সেই নির্দেশনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাস্তবায়ন করবেন। কিন্ত দাপ্তরিক নির্দেশনা আসার আগেই রিট পিটিশনে রায় পাওয়া চেয়ারম্যানের কর্মী-সমর্থকরা রায় বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন ঘেরা সহ ঝাড়– মিছিল করে। এরপর ৩০/৩৫ জনের একটি দল রোববার ৬ জুন ইউনিয়ন পরিষদের সকল কক্ষে তালা লাগিয়ে সেখানে অবস্থান নেয়। তার আগে চেয়াম্যানের নেতৃত্বে কিছু লোক ইউনিয়ন সেবা কেন্দ্র থেকে কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও প্রিন্টার নিয়ে যায়। তথ্যসেবা কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা বুলবুলি ও আইয়ুব আলী জানান, সন্তানের জন্ম নিবন্ধন সনদ নিতে এসেছি, পরিষদ তালাবদ্ধ দেখে ফিরে যাচ্ছি। জুয়েল হাওলাদার নামের অপর একজন জানান, তথ্যসেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে পরিচালিত ব্যাংক এশিয়ার মাধ্যমে ইন্সুরেন্সের টাকা জমা দেবার জন্য ৫ দিন যাবত তথ্যসেবা কেন্দ্রে ঘুরছি, তথ্যসেবা কেন্দ্র বন্ধ। প্যানেল চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান জানান, সাময়িক বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যানের ভাড়াটিয়া লোকজন পরিষদে তালা দিয়ে সেখানে অবস্থান নেয়ায় ইউপি সচিব ও সদস্যগণ পরিষদে যেতে পারছেনা ফলে পরিষদের সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা জানান, স্থানীয় প্রশাসনকে তালা খুলে দেবার জন্য বলা হয়েছে। পুলিশী সহযোগিতা লাগলে দেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপক কুমার দেব শর্মা জানান, তালা খোলার ব্যাপারে প্যানেল চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।