উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ। গতকাল শনিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে বসুরহাট বাজারের ইসলামী ব্যাংকের সামনে মিজানুর রহমান বাদলের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
এর প্রতিবাদে উপজেলা আওয়ামী লীগ সমর্থিত বাদলের অনুসারীরা দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় চরকাঁকড়া টেকের বাজারে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ গুলি চালালে ছয়জন গুলিবিদ্ধ হন। তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফখরুল ইসলাম সবুজ (৫৫) ও তার ছেলে তরিকুল ইসলাম চয়ন (১৮)। অন্যদের নাম এখনও জানা যায়নি। গুরুতর আহত চয়নকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার চোখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলির চিহ্ন রয়েছে। আহত সবাই উপজেলা আওয়ামী লীগ সমর্থিত বাদলের অনুসারী।
গুলিবিদ্ধ সবুজ জানান, তারা কাদের মির্জার গ্রেফতার দাবিতে আন্দোলন করার সময় পুলিশ বেপরোয়া গুলি চালায়। এতে তারা পিতা-পুত্রসহ অন্তত ৬ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তিনি অজ্ঞাত স্থান থেকে হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টেকের বাজারে হরতালের সমর্থনে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভ করার সময় পুলিশ বাধা দেয়। এতে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশের গুলিতে বাদল সমর্থিত পিতা-পুত্রসহ অনেকে গুলিবিদ্ধ হন। নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, ব্যারিকেড ভাঙতে গেলে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে ৩-৪ জন পুলিশ আহত হয়। পরে পুলিশ ২০-২৫ রাউন্ড শর্টগানের গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগে সকাল ৯টায় বসুরহাট বাজারে প্রধান সড়কের ইসলামী ব্যাংকের সামনে মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। পরে ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দেয় উপজেলা আওয়ামী লীগ।
কাদের মির্জাকে গ্রেফতারের দাবি হরতালকারীদের : নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের ওপর হামলার প্রতিবাদে তার কর্মী ও অনুসারীরা বিক্ষোভ মিছিল এবং সড়ক অবরোধ করেছে। গতকাল শনিবার (১২ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে কাদের মির্জাকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে হরতালের অংশ হিসেবে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, বসুরহাট থেকে বাংলাবাজার-চাপরাশির হাটের প্রধান সড়ক ও উপজেলার ৮ ইউনিয়নের প্রধান প্রধান সড়কগুলো অবরোধ করা হয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, আমরা সড়ক অবরোধের কথা শুনেছি। এ ব্যাপারে দ্রুত আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এর আগে একইদিন সকাল ৮টায় বসুরহাট বাজারের প্রেস ক্লাব কোম্পানীগঞ্জের সামনে বসুরহাট টু দাগনভূঞা সড়কে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ হামলার প্রতিবাদে কোম্পানীগঞ্চের বিভিন্ন ইউনিয়নে এখনো কাদের মির্জার বিরোধী মিছিল করছে বাদল অনুসারীরা।
জানা যায়, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল তার ব্যক্তিগত গাড়িতে আওয়ামী লীগ নেতা আলালসহ ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। যাত্রা পথে বসুরহাট বাজারের প্রেস ক্লাব কোম্পানীগঞ্জের একটু সামনে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে কাদের মির্জা তার ৪০-৫০জন অনুসারী নিয়ে বাজার পরিদর্শন করে আসার পথে বাদলের গাড়ির মুখোমুখি হয়। এসময় কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার ৪০-৫০ জন অনুসারী মিজানুর রহমান বাদলের গাড়ির গতিরোধ করে তার ওপর হামলা চালায়।