দেশের সাধারণ নাগরিকদের করোনা প্রতিরোধে টিকা দেওয়া হলেও রোহিঙ্গারা এখনই তা পাচ্ছেন না। রোহিঙ্গাদের টিকা দিতে সরকারের প্রচেষ্টা রয়েছে। দেশে টিকা সংকট কাটিয়ে উঠার পর রোহিঙ্গারা টিকা পেতে পারেন। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সারাদেশ জুড়ে টিকা দেওয়ার কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। তবে টিকা দান কর্মসূচিতে রোহিঙ্গারা অংশ নিতে পারছেন না। কেননা টিকা পেতে হলে নিবন্ধন করতে হবে। আর নিবন্ধনের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রয়োজন হয়ে থাকে। তবে রোহিঙ্গারা যেহেতু এদেশের নাগরিক নয়, সেহেতু তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র নেই। আর সে কারণে তারা টিকা কর্মসূচির বাইরে রয়েছে। জানিয়েছে বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর.কম।
করোনার প্রকোপের প্রথম দিকে কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কেউ আক্রান্ত হয়নি। তবে ধীরে ধীরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা প্রকোপ বাড়তে থাকে। প্রায় এক হাজার রোহিঙ্গা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর মৃত্যুবরণ করেছেন এ পর্যন্ত ১৩ জন রোহিঙ্গা। করোনা ঠেকাতে শেষ পর্যন্ত গত মাসে উখিয়ার পাঁচটি রোহিঙ্গা ক্যাম্প লকডাউন করা হয়। টিকা সংকট কাটাতে বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জন্যও টিকা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছে। বিদেশি কোনো দেশ চাইলে রোহিঙ্গাদের টিকা দিতে পারে বলেও প্রস্তাবনা রেখেছে। গত ১৮ মে বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার বেনোয়েট প্রিফন্টেইনের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বৈঠক করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের নাগরিকদের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জন্যও টিকা সহযোগিতা চান। এ সময় ড. মোমেন প্রস্তাব দেন, কানাডা চাইলে রোহিঙ্গাদের জন্যও টিকা দিতে পারে। রোহিঙ্গাদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, রোহিঙ্গাদের টিকা দেওয়ার জন্য অনেক দেশ শুধু আমাদের আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছে। তবে তারা দিচ্ছে না। আমরা শুধু আশ্বাসই পাচ্ছি। তবে আমরা রোহিঙ্গা এলাকায় সবাকেই টিকা দিতে চাই। বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা সবাইকে টিকা দিতে চাই। শুধুমাত্র রোহিঙ্গাদের টিকা দিলেই হবে না, আমাদের লোকাল লোকদেরও টিকা দিতে হবে। তা না হলে সেটা ফেয়ার হবে না।
তিনি বলেন, কক্সবাজার এলাকায় রোহিঙ্গাদের জন্য স্থানীয়রা অনেক ভোগান্তিতে পড়েছেন। আর তারপর যদি দেখে, শুধু রোহিঙ্গারা টিকা পাচ্ছেন, আর স্থানীয়রা পাচ্ছেন না, তাহলে তারা সেটা মেনে নেবেন না। তাই ৪০ বছরের ঊর্ধ্বে সবাইকে আমরা টিকা দিতে চাই। এদিকে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকরা টিকা নিতে পারছেন। এর বাইরে রাশিয়া ও চীন বাংলাদেশে অবস্থানরত নিজ নিজ দেশের নাগরিকদের টিকাদানে উদ্যোগ নিয়েছে।