দিনে একটি আপেল খেলে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না- এমনই মত বিশেষজ্ঞদের। ঠিক তেমনই দিনে দু’টি ফল খেলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায় অনেকাংশেই। নতুন এক গবেষণায় এই তথ্য জানা গেছে।
৭ হাজারেরও বেশি মানুষের উপর করা অস্ট্রেলিয়ার এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রাপ্তবয়স্করা যারা দিনে অন্তত দু’বার ফল খেয়েছেন; তাদের ৫ বছরের মধ্যে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমেছে ৩৬ শতাংশ পর্যন্ত। ‘দ্য জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল এন্ডোক্রিনোলজি অ্যান্ড মেটাবোলিজম’ এ এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
এ গবেষণার প্রধান গবেষক নিকোলা পি বোন্ডনো (পিএইচডি) এবং তার সহকর্মীরা দীর্ঘদিনের প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে এই তথ্য প্রকাশ করেছেন। ২ জুন দ্য জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল এন্ডোক্রিনোলজি অ্যান্ড মেটাবোলিজমের অনলাইনে প্রকাশ পেয়েছে পুরো গবেষণাপত্রটি। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, ফলে থাকা উপাদানসমূহ রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস করতে সহায়তা করে। কলা বা সাইট্রাস ফলের তুলনায় যারা নিয়মিত আপেল খেয়েছেন; তাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমেছে এবং ইনসুলিন উৎপাদন বেড়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার পার্থের এডিথ কাউয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর নিউট্রিশন রিসার্চ এর প্রধান বোন্ডনো জানিয়েছেন, দিনে যদি ১৫০ গ্রাম করে মিডিয়াম সাইজের আপেল, কমলা বা কলা খাওয়া যায়; তাহলে ডায়াবেটিসসহ উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা এবং হৃদরোগের মতো সমস্যার ঝুঁকি কমবে।
গবেষক বোন্ডনো আরও জানিয়েছেন, ফলের রস রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। অনেকেই মনে করেন ফল খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। আসলে ধারণাটি ঠিক, ফলে থাকে প্রাকৃতিক সুগার যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েটের মধ্যে আপেল, কলা, কমলা রাখা প্রয়োজন। তাহলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমবে। ফল খেলেই ডায়াবেটিস রোগ থেকে রক্ষা পাবেন- বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়। তবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে নিয়মিত ফল খেলে-বলে মত গবেষকদের। গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ৫-১২ বছর নিয়মিত ফল খাওয়ার পর গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের রক্তের শর্করা, ইনসুলিন এবং ডায়াবেটিস পরীক্ষা করেন গবেষকরা। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নন এমন ৭ হাজার ৬৭৫ জনের উপর পরিচালিত হয় গবেষণাটি। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সর্বাধিক খাওয়া ফলের মধ্যে ছিল আপেল, কলা এবং সাইট্রাস ফল। দেখা যায়, ৪ হাজার ৬৬৭ জন যারা টানা ৫ বছর প্রতিদিন অন্তত ২টি করে ফল খেয়েছেন; তাদের মধ্যে মাত্র ১৭৯ জন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন। বয়স, লিঙ্গ, শারীরিক ক্রিয়াকলাপ, শিক্ষা, আর্থসামাজিক অবস্থা এবং অন্যান্য বিষয়গুলোর জন্য সামঞ্জস্যতা বিচার করার পর গবেষকরা দেখেছেন, যারা নিয়মিত ফল খেয়েছেন অন্যদের তুলনায় তাদের ৫ বছরের মধ্যে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি ৩৬ শতাংশ কম। সূত্র: ওয়েবএমডি