কেটে নেয়া বোরো ধান গাছের গোড়া থেকে আবারও ধান উৎপাদন করে লাভবান হযয়েছেন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার অনেক কৃষক। কেটে নেয়া ফসলের গোড়া থেকে উৎপন্ন হওয়া চারায় পুনরায় ফসল উৎপাদনকে রেটুন ক্রপ বলে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে রেটুন ক্রপ পদ্ধতির ধান চাষে পরিশ্রম ও ব্যয় কম। উপজেলা কৃষি দপ্তর বলছে, ধান গাছের গোড়া থেকে আবার ধান চাষ করা যায়। বিশেষ করে ব্রি ধান-২৮ ও ২৯ ধানের গোড়া কাঁচা থাকে। তাই ধান কাটার পর এসব ধান গাছের গোড়া থেকে কুড়ি বের হয়। আর তার থেকে পুনরায় ধান উৎপাদন সম্ভব। উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের কৃষকরা এই পদ্ধতিতে ধান চাষ করছেন। ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের বাগভান্ডার গ্রামের কৃষক আতাউর জানন, বোরো মৌসুমে আড়াই বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ ধান চাষ করেছেন। মে মাসের শুরুতে এসব ধান কেটে তিনি ঘরে তোলেন। ওই জমিতে পড়ে থাকা ধান গাছের গোড়া নষ্ট না করে পুনরায় ধান উৎপাদন করতে পরিচর্যা করেন। ধান গাছের গোড়া কাঁচা থাকায় দ্রুত নতুন কুঁড়ি বের হয়। সেচ ব্যতীত যত সামান্য সার প্রয়োগ ও কয়েকবার কীটনাশক স্প্রে করে মাঝারি ধরনের ফলন পেয়েছেন তিনি। দুই বিঘা জমি থেকে তিনি ৮/১০ মণ ধান পাবার আশা করছেন। কৃষক আজিজার রহমান জানান, মৌসুমের সময় ধান কেটে নেয়া জমি থেকে গত দু’দিন আগে তিনি পুনরায় ধান কেটেছেন। এক বিঘা জমিতে প্রায় ৪ মণ ধান ফলেছে। নিজ শ্রম আর সার ও কীটনাশক বাবদ তার খরচ হয়েছে মাত্র ৩শ’ টাকা। যে ধান উৎপন্ন হয়েছে বলতে গেলে পুরোটাই তার বাড়তি লাভ। ভূরুঙ্গামারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, কৃষি বিজ্ঞানের ভাষায় ফসলের গোড়া থেকে পুনরায় ফসল উৎপাদনকে ‘রেটুন শষ্য চাষ’ বলা হয়। বিশেষ করে বোরো ধান কেটে নেয়ার পর পরবর্তী আমন চাষের মাঝে দু’মাসের বিরতি থাকে। এই সময়ে জমিতে রেটুন পদ্ধতিতে ধান চাষ করে কৃষকরা বাড়তি ফসল পেতে পারে। এই পদ্ধতিতে ধান চাষ খুব বেশি লাভজনক নয়। যে কৃষক নিজে পরিশ্রম করতে পারেন তিনি বাড়তি ফসল পেয়ে লাভবান হতে পারেন।