সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫১ পূর্বাহ্ন

লকডাউন তামাশায় পরিণত হয়েছে : মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৭ জুন, ২০২১

লকডাউন এখন তামাশায় পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল রোববার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সরকার ৭ দিনের জন্য পুনরায় লকডাউন অথবা শাটডাউন ঘোষণা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা এখন তামাশায় পরিণত হয়েছে। সরকারের অযোগ্যতা এবং জবাবদিহি হীনতার কারণে লকডাউন সম্পূর্ণ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। গরীব সাধারণ মানুষ, যারা দিন আনে দিন খায় তাদের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা না করে অপ্রাতিষ্ঠানিক সেক্টরের শ্রমিক ও কর্মরত ব্যক্তিদের নগদ টাকা ট্রান্সফারের ব্যবস্থা না করে লকডাউন কখনই কার্যকর হতে পারে না। মানুষ ক্ষুধার তাগিদে কাজের সন্ধানে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, করোনা নিয়ে সরকারের কোন সুপরিকল্পিত কর্মসূচী নেই। প্রণোদনার ক্ষেত্রে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা ও ভ্যাকসিন সংগ্রহ এবং বিতরণে চরম অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি এবং অযোগ্যতার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। ‘জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ ব্যতিরেকে এই ভয়াবহ ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলা করা সম্ভাব নয়। অবিলম্বে এই করোনা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট জাতীয় কমিটি, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন, এনজিও এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মতামতের মাধ্যমে যৌথ প্রচেষ্টার উদ্যোগ গ্রহণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি আরো বলেন, সুনামগঞ্জের উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে দুই মন্ত্রীর পাল্টাপাল্টি বক্তব্য এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর করোনা ভ্যাকসিন সংগ্রহ বিষয়ে মন্তব্য প্রমাণ করেছে যে, সরকারের মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে কোন সমন্বয় নেই। চরম সমন্বয়হীনতা, অযোগ্যতা এবং দুর্নীতি প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্পকে শুধুমাত্র লুটপাটের ক্ষেত্রে পরিণত করা হয়েছে। ‘এই সরকারের সর্ব খাতে চরম দুর্নীতি দেশের অর্থনীতিকে ভয়াবহ পরিণতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাই এই সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ করে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় অবাধ, সুষ্ঠু ও একটি অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। অন্যথায় বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে।’ গত শনিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে ফখরুল বলেন, বৈঠকে রাজধানী ও সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনার ডেল্টাভেরিয়েন্ট সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নেয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বৈঠকে সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন। রোগীর চাপে সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেখা দিয়েছে জরুরি চিকিৎসা উপকরণ সংকট এবং জীবন রক্ষাকারী ওষধ সমূহের মারাত্মক সংকট।
জেলা হাসপাতালগুলোতে পরিস্থিতি সব থেকে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অক্সিজেন এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর এর অভাবে অনেকেই মৃত্যু বরণ করছেন। অথচ সরকার কোন সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
ফখরুল বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে টিকা সংগ্রহ ও বিতরণ সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে কোন পরিকল্পিত কার্যকরী রোড ম্যাপ তৈরি করা হয়নি এবং জনগণের সামনে তা প্রকাশ করা হয়নি। বিএনপি বারবার এই বিষয়ে সতর্ক করেছে এবং বিকল্প উৎস সন্ধানের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের তাগাদা দিয়েছে। কিন্তু এই অনির্বাচিত সরকারের দায়িত্বহীনতা, উদাসিনতা, অযোগ্যতা এবং দুর্নীতির কারণে পুরো কার্যক্রম ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। ‘ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের টিকা সরবরাহে অপারগতা এবং চীন ও রাশিয়ার প্রস্তাব শুরুতে ফিরিয়ে দেয়া ও একটি মাত্র বেসরকারি ব্যবসায়ী কোম্পানির নিকট জিম্মি হওয়ার কারণে আজকে গোটা জাতি চরম স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com