রংপুরের পীরগাছায় উপজেলায় গৃহবধু আছমা বেগম হত্যাকান্ডে জড়িত ঘাতক রাজু মিয়ার মা ও দ্বিতীয় স্ত্রী শিরিনাকে আসামী না করায় ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতের বড় ভাই আব্দুর রউফ মিয়া। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পীরগাছা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। লিখিত বক্তব্যে আব্দুর রউফ মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার দিন রাতে তিনটার সময় পীরগাছা থানা থেকে আমাকে মাত্র বিশ মিনিট দেওয়া হয় এজাহার দাখিল করার, এসময় পরিকল্পিত ভাবি শুধুমাত্র রাজু মিয়াকে আসামী করা হলেও রাজু মিয়ার মা এবং ২য় স্ত্রী শিরিনা কে আসামি করা হয় নাই। তিনি এসময় অভিযোগ করে বলেন, দ্বিতীয় স্ত্রী শিরিনা বেগমকে মেনে না নেওয়ায় ঘাতক স্বামী রাজু মিয়া, তার মা রহিতন নেছা, দ্বিতীয় স্ত্রী শিরিনা বেগম পরিকল্পিত ভাবে গত ২৬ জুন সকালে প্রথম স্ত্রী আছমা বেগমকে বালিশ চাপা দিয়ে শ^াসরোধে হত্যা করে। তিনি জানান, ঘটনার খবর পেয়ে আমি ঢাকা থেকে ওই দিন রাত আড়াই দিকে পীরগাছা থানায় যাই। এসময় থানা পুলিশ প্রভাবিত হয়ে কৌশলে আছমা বেগমের শ^াশুড়ী রহিতন নেছা, দ্বিতীয় স্ত্রী শিরিনা বেগম ও তার স্বজনদের বাদ দিয়ে স্বামী রাজু মিয়া একমাত্র আসামী করে আমার কাছ থেকে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। তিনি বলেন, এসময় আমি জানতে চেয়েছিলাম একজন আসামী কেন? বাকিদের নাম নাই কেন? অন্য আসামীদের নাম না দিলে স্বাক্ষর দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে, পুলিশ তাকে জানায়, এখন একজনের বেশি আসামী দেয়া যাবে না। পরে চার্জশীটে অন্যদের আসামীদেরকে যুক্ত করা হবে। এতেও আমি রাজি না হলে রাত তিন টার দিকে পুলিশ আমাকে ২০ মিনিটের মধ্যে এজাহার দাখিলের সময় বেঁধে দেন এবং আমাকে থানা থেকে যাওয়া যাবে না বলে জানান। পরে আমি নিরুপায় হয়ে পুলিশের লেখা এজাহারে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হই। এতে করে ঘটনার সাথে জড়িত নিহত আছমা বেগমের শ^াশুড়ী রহিতন নেছা, দ্বিতীয় স্ত্রী শিরিনা বেগম ও তাদের সহযোগি আসামীরা বাদ পড়ে যায়। ফলে তারা নির্মম এ হত্যাকান্ডটি বিভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। তিনি জানান, আমরা জানতে পেরেছি আসামী রাজু মিয়ার মা রহিতন নেছা, দ্বিতীয় স্ত্রী শিরিনা বেগম প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত। তাদের একটি প্রভাবশালী মহল মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা করছে। আসামীরা পলাতক থাকায় নিহত আছমা বেগমের নাবালক দুই সন্তান আছিব মিয়া(১২) ও আপন মিয়া(৪) বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সংবাদ সম্মেলনে নিহতের দুই সন্তান মায়ের হত্যাকারী পিতা ও অন্যদের শাস্তির দাবি জানান। তারা পুলিশ মহাপরিদর্শক, রংপুর বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার, রংপুর জেলা পুলিশ সুপার, পীরগাছা থানা পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা সহ সকল আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর নিকট ঘটনার সাথে জড়িত অপরাপর আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে নিহতের তাওয়াই শফি মিয়া, মামা মহুবার রহমান, দুই সন্তান আছিব ও আপন, ব্যবসায়ী জাকির আহম্মেদ, মোস্তাক আহম্মেদ, আজাহার আলী প্রধান, পরিবারের সদস্য, এলাকাবাসী ও গন্যমাধ্যকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।