আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং জনপ্রতিনিধিদের লকডাউনে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘রাজনীতি হচ্ছে মানুষের জন্য তাই মানুষের মুখের হাসি ফোটানোর জন্য দিনরাত পরিশ্রম করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’ গতকাল বুধবার (৩০ জুন) ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি আয়োজিত করোনাভাইরাস সংক্রমিত সীমান্তবর্তী জেলাসহ মোট ৩০টি জেলা-উপজেলায় প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি। তিনি তার সরকারি বাসভবন থেকে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
করোনা সংক্রমণ এখন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘উচ্চমাত্রার সংক্রমণ সীমান্তবর্তী জেলাগুলো থেকে রাজধানীমুখী হয়েছে, ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামাঞ্চলে।’ এমন বাস্তবতায় আমাদের সবার এবং পরিবারের সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শতভাগ মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। স্বাস্থ্যবিধির প্রতি সামান্যতম অবহেলা আমাদের ছিটকে দিতে পারে চিরচেনা জগত থেকে।’ জনগণের সুরক্ষায় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী শেখ হাসিনা সরকার ১ থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের এ সময়ে নিজেদের কল্যাণের কথা ভেবে সবাইকে ঘরে অবস্থানের আহ্বান জানান।
সংকট ও দুর্যোগে প্রধানমন্ত্রী সবসময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেন জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে যেখানে যাকে প্রয়োজন তাকে সেই দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে।’ প্রধানমন্ত্রী পরিস্থিতি মোকাবিলায় যে পদক্ষেপ নিচ্ছেন তার ওপর আস্থা রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। জীবন জীবিকার সমন্বয় করে করোনার প্রথম ধাপ শেখ হাসিনা সফলভাবে মোকাবিলা করেছেন এবং দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় তার বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ বাস্তবায়নে সকলের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। ‘সংক্রমণ রোধের পাশাপাশি অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব প্রশংসা কুড়িয়েছে দেশ-বিদেশে, অথচ একটি রাজনৈতিক দল নিজেরা মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে নিরাপদ দূরত্বে থেকে সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম মিথ্যাচারের বাজনা বাজিয়ে যাচ্ছে।’ বিএনপি সচেতনতা তৈরি না করে মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘তারা টিকার বিরুদ্ধেও নির্লজ্জ মিথ্যাচার চালিয়েছিল, অথচ এখন তারাই টিকার জন্য সবার আগে লাইনে দাঁড়িয়েছে।’ অপপ্রচারের ঘোড়ায় চড়ে বিএনপি সরকারের অর্জনকে ম্লান করার অপচেষ্টা করছে কিন্তু জনগণ তাদের নেতিবাচক অপতৎপরতা প্রত্যাখ্যান করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শেখ হাসিনা আমাদের আস্থার ঠিকানা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মহান স্রষ্টার ওপর ভরসা রেখে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অতীতে অনেক দুর্যোগ মোকাবিলা করেছে আওয়ামী লীগ এবং এখন করোনার অভিঘাতও সবার সহযোগিতায় মোকাবিলা করবো ইনশাআল্লাহ।’ বিএনপি শুধু অপপ্রচারই চালাবে আর শেখ হাসিনা সরকার জনগণের প্রতি দেয়া কমিটমেন্ট অক্ষরে অক্ষরে পালন করে যাবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগ জনগণকে ভালোবেসে জনসেবা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অন্যদিকে বিএনপি জনমানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে মিথ্যার ফুলঝুরি ছুঁড়ছে আর অব্যাহত লিপ সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে।’ আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের সভাপতিত্বে ধানমন্ডিতে দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক সামছুন্নাহার চাঁপা, কেন্দ্রীয় কার্যকরী সদস্য সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম ও ত্রাণ উপকমিটির সদস্য ডা. হেদায়েতুল ইসলাম বাদল প্রমুখ।