গতকাল বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) ভোর থেকেই শুরু হয়েছে সাত দিনের কঠোর লকডাউন। এসময় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাঁচাবাজার খোলা থাকবে। কিন্তু লকডাউনের প্রথম দিন রাজধানীর অধিকাংশ বাজারই ক্রেতাশূন্য। এমনকি অনেকে দোকানও খুলেনি। ফলে জিনিসপত্রের দাম নতুন করে বাড়েনি। সয়াবিন তেল, মসুর ডাল, পেঁয়াজ, চিনি ও ডিমের দাম কমেছে। তবে লকডাউন ঘোষণার আগে অধিকাংশ পণ্যের দাম নাগালের বাইরে থাকায় স্বস্তি নেই বাজারে। উপরন্ত বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে মসলাজাতীয় বিভিন্ন পণ্য।
বিক্রেতারা বলছেন, সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথম দিন অনেকেই পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া সকাল থেকে বৃষ্টি পড়ছে, যে কারণে বাসা থেকে বের হচ্ছে না অনেকে। প্রতি শুক্রবার নিয়মিত যারা বাজার করেন তারাও আজ বের হননি। আবার রাজধানীর রাস্তাগুলোতে ভ্যানে করে পণ্য বিক্রিও কমে গেছে। অন্যদিনগুলোর তুলনায় আজ ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয় কম। মানিক নগর এলাকার ব্যবসায়ী ইউসুফ আলী বলেন, ভয়ে ক্রেতারা আজ বাসা থেকে বের হচ্ছে না। যাদের অফিস আছে কেবল তারাই বের হচ্ছে। ফলে দোকান খোলা রেখে খুব বেশি লাভ হচ্ছে না। রাজধানীর গোপীবাগ, মতিঝিল এলাকায় বাজার ঘুরে দেখা যায় অধিকাংশ কাঁচা বাজার, মুরগির বাজার ও মাছের বাজারে ক্রেতাশূন্য।
এ প্রসঙ্গে রাজধানীর গোপীবাগ বাজারের মুদি ব্যবসায়ী রফিকুল আলম বলেন, ক্রেতা না থাকার পাশাপাশি বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বিপণনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন সয়াবিন তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যে কারণে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে চার টাকার মতো কমেছে। তিনি বলেন, বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেল ১৪৯ টাকা। খোলা সয়াবিন ১২৫ টাকা। আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা। ফার্মের মুরগির ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৮ টাকা। আগের মতোই দাম অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা। আর খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। এদিকে মুরগির ব্যবসায়ীরা বলছেন, লকডাউনের প্রথম দিনে মুরগির ক্রেতা নেই। আগামীকাল শুক্রবার আশা করা যায় বেচা বিক্রি বাড়বে। কাপ্তান বাজারের ব্যবসায়ী আসলাম জানান, লকডাউনের প্রভাবে মুরগির দাম বাড়েনি। বরং গত কয়েকদিনের তুলনায় দাম কমেছে ২০ টাকার মতো। সোনালী মুরগি ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন জানিয়ে তিনি উল্লেখ করেন দু’তিনদিন আগেও এই মুরগিই ২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি।
এদিকে মাছের দাম কিছুটা কমলেও ক্রেতা সংকট রয়েছে বাজারে। কাঁচা বাজারে দেখা যায়, ক্রেতা কম থাকলেও বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। শসার কেজি ৫০ টাকা। পটলের কেজি ৫০ টাকা। ঢ়েঁড়সের কেজি ৫০ টাকা। বরবটি ৬০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, পাকা টমেটো ১০০ টাকা, ঝিঙে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা।