টানা ২দিনের বর্ষনে ও ভারতের উজানের পানিতে মুহুরী নদী তার ভারসাম্য হারিয়ে বেড়িবাঁধ অতিক্রম করে ফুলগাজী সদরের জয়পুর ও দৌলতপুর দিয়ে দুটি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) দুপুরে ফুলগাজী সদর ইউনিয়ন উত্তর দৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে একটি ভাঙ্গন দেখা দেয়। মুহুর্তে পানির খর¯্রােতে বেড়িবাধঁটি প্রায় ৫০ ফিট ভেঙ্গে তলিয়ে যায় আশপাশের গ্রামাঞ্চল ও মাছের ঘের, আমন ধানের বীজতলাসহ অসংখ্য বাড়িঘর। অপরদিকে বিকাল ৩টায় সদর ইউনিয়ন জয়পুর গ্রামের আবদুল মমিনের বাড়ির পাশ দিয়ে নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পানি বিপদসীমার ১১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে? মুহুর্তে ফুলগাজী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় পানিতে তলিয়ে যায়। দোকান-পাট ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে। আরও বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে রয়েছে রাস্তাঘাট, ফসলের মাঠ, আমন ধানের বীজতলা। ভেসে গেছে মৎস্য চাষীদের একমাত্র ভরসা মাছের ঘের। স্থানীয়রা জানান, ত্রুটিপূর্ণ বাঁধ নির্মাণের কারণে প্রতি বছরই সামান্য বৃষ্টি হলে নদী রক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন বলেন, টানা বৃষ্টিতে বিপৎসীমার ১১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে মুহুরী নদীর পানি। পানির অতিরিক্ত চাপের কারণে বাঁধের ভাঙন দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করে মেরামতের ব্যবস্থা নেবে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছেন ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন, ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল আলিম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌসি বেগম, ফুলগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএনএম নুরুজ্জামান, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুলতানা নাসরিন কান্তা, সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম। এদিকে বন্যার নিউজ কাভারেজ করতে গিয়ে ফুলগাজী প্রেসক্লাবের সভাপতি কবির আহম্মদ নাছির ও সাংবাদিক মোঃ সাইফুল ইসলাম মজুমদার তাদের ব্যবহৃত মোটর সাইকেলসহ পানির খর¯্রােতের মধ্যে পড়ে কঠিন বিপদের সম্মুখিন হয়। ভাঙ্গন স্থান পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার লোকজনকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দ্রুত মেরামত করার অনুরোধ করেন।