করোনা ভাইরাস নামক রোগে পুরো পৃথিবী যখন নাকাল, বিশ্ববাসী পার করছে এক অস্বস্তিকর পরিবেশ। মৃত্যু যেখানে দরজায় কড়া নাড়ছে, আপন প্রাণ বাঁচাতে তখন মরিয়া সকলে। সংকটময় এ পরিস্থিতিতে নিজের জীবনের ঝ্ুঁকি নিয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীদের জীবন বাঁচাতে অক্সিজেন নিয়ে ছুটে চলছেন সীতাকু- উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন রানা। গেল বছর চীনের উহান থেকে কোভিড-১৯ বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়লে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে গোটা দেশ। চট্টগ্রামের সীতাকু- পরিণত হয় করোনার হটজোনে। সর্বাত্মক লকডাউনে যখন সবাই ঘরবন্দী, করোনায় মৃত পিতার লাশের কাছে যখন আপন সন্তানরা ভিড়ছে না, ঠিক তখন থেকেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জীবন বাঁচাতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগে ডুব দেন ছাত্রলীগ নেতা মেসবাহ উদ্দিন রানা। চ্যালেঞ্জকে সঙ্গী করে নিজের নিরাপত্তার কথা তুচ্ছ করে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ছুটে গেছেন সৈয়দপুর ইউনিয়নের করোনা আক্রান্ত রোগীদের দ্বারে দ্বারে। শখের মোটরসাইকেলের পিছনে অক্সিজেন সিলিন্ডার বাঁধাই রাখা ছিল রানার করোনা কালের নিত্য কাজ। একসময় এ অক্সিজেন সিলিন্ডার সেবা নেশায় পরিণত হয় রানার। করোনার প্রথম ঢেউয়ে বহু রোগীকে অক্সিজেন সেবা দিয়ে কুড়িয়েছেন ব্যাপক প্রশংসা। সম্প্রতি করোনার প্রকোপ বেড়ে গিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। আর এ মুহূর্তে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বস্তুুটি হচ্ছে অক্সিজেন। যা হাতের নাগালে পাওয়া দুঃসাধ্য। সংক্রমণের এ উর্ধ্বগতির সময়ে আবারও অক্সিজেন সেবা দেওয়া শুরু করেছেন মেসবাহ উদ্দিন রানা। প্রতিদিন কোন না কোন করোনা আক্রান্ত রোগীকে বাইক যোগে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দিচ্ছে সৈয়দপুরের যুবক রানা। দিন কি রাত সময়ের তোয়াক্কা না করে ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে এবাড়ি ওবাড়ি ছুটছেন তিনি। করোনা আক্রান্ত রোগীদের অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দিতে বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। যেন একজন রোগীর জীবন বাঁচানোই তার কাছে মুখ্য। পুরো করোনা কালীন সময়ে এভাবেই অক্সিজেন সেবা দিয়ে যেতে চান এ ছাত্রনেতা। মেসবাহ উদ্দিন রানা বলেন, এই মুহুর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অক্সিজেন। যা সত্যিই অপ্রতুল। গরীব ও হতদরিদ্র রোগীদের অক্সিজেন পাওয়া মোটেও সহজ নয়। হাসপাতালেও অক্সিজেন সংখ্যা সীমিত। রোগীর তুলনায় অক্সিজেন একেবারেই কম। মানবিক চিন্তা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে কাজটি আমার মাথায় আসে। গত বছর শুরু করা এ কাজ আমাকে আরো দায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়। আর এ কাজে আমাকে সহযোগিতা করার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই সংসদ সদস্য আলহাজ্ব দিদারুল আলম এর প্রতি। তার সমর্থন ও অনুপ্রেরণা আমাকে আরো বেগবান করেছে। গত কদিন ধরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে করোনা আক্রান্ত রোগীদের মৃতুর খবরে আমি খুবই ব্যথিত হয়েছি। সাহস আর পূর্বের অভিজ্ঞতায় ভর করে আবারও নেমে পড়ি অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহের কাজে। ইনশাআল্লাহ আমার এ সেবা অব্যাহত থাকবে।