চলমান লকডাউন প্রত্যাহারের দাবিতে রাজশাহীতে থালা হাতে বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে তারা এ বিক্ষোভে অংশ নেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় সাহেব বাজার এলাকায় রাস্তার ওপরে বিক্ষোভ শুরু হয়। এসময় তারা অবিলম্বে লকডাউন প্রত্যাহারের দাবি জানান। তারা বলেন, ব্যবসায়ীরা লকডাউনে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছেন। করোনাকালে এমনিতেই দেড় বছর ধরে ব্যবসা মন্দা। ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক ইয়াসিন আলী বলেন, আমরা কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছি না। বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে। আমরা লকডাউন প্রত্যাহারসহ আমাদের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি।।
এছাড়্ওা কঠোর বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে রাজশাহীতে দোকানপাট খুলে দেওয়ার দাবিতে ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী নগরের সবচেয়ে বড় বিপণিকেন্দ্র আরডিএ মার্কেটের সামনে ব্যবসায়ী-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালন করেন। কর্মসূচিতে তাঁরা ওয়ানটাইম থালা হাতে নিয়ে বলতে থাকেন, ‘ভাত দে, ভাত দে; নইলে লকডাউন তুলে নে’। কর্মসূচি চলে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত।
ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা বলেন, তাঁরা ১৬ মাস ধরে ঠিকমতো দোকানপাট খুলে ব্যবসা চালাতে পারছেন না। এতে তাঁরা ও তাঁদের পরিবার দেড় বছর ধরে অসহায় জীবন যাপন করছেন। এই পরিস্থিতিতে এবারও সরকার ঈদ সামনে রেখে কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে। অথচ কাঁচাবাজার, কলকারখানা সব চালু আছে। সেখানে কি করোনা নেই? যত করোনা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে? তাঁরা দ্রুত প্রশাসনের পক্ষ থেকে দোকানপাট খুলে দেওয়ার জন্য দাবি জানান। দোকানপাট খোলার সিদ্ধান্ত দ্রুত না এলে, তাঁরা আগামী শনিবার থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট খুলবেন বলে ঘোষণা দেন।
রাজশাহী ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ মামুদ হাসান বলেন, আজ তাঁরা ভাতের কথা বলছেন, তাঁদের ভাতেও মারছেন, পানিতেও মারছেন। না খেয়েও অনেক মানুষ অসহায় হয়ে নানাভাবে মারা যাচ্ছেন। রাজশাহী গরিব অঞ্চল। প্রত্যেক মানুষের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। সরকার ঘোষণা দিলেও তাঁরা আজ পর্যন্ত একটি টাকাও প্রণোদনা পাননি। তাঁদের ব্যবসায়ী ও কর্মচারী, যাঁরা আর্থিকভাবে এই কয় মাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের দ্রুত আর্থিক সহায়তা দেওয়া হোক। তিনি এই অঞ্চলের জনপ্রতিনিধি ও মেয়রের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা দেখেন লকডাউন ছাড়া অন্য কোনো উপায় আছে কি না। অতিদ্রুত টিকা দিয়ে বা মানুষকে অন্যভাবে সচেতন করে লকডাউনের বিকল্প করা যায় কি না।’
নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মন বলেন, রাজশাহীতে লকডাউনের ২৯তম দিন যাচ্ছে আজ। সামনে যেহেতু ঈদ, তাই তাঁরা দোকানপাট খুলে দিতে বলছেন। তাঁদের দাবিদাওয়া যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। তারপরও আজ হঠাৎ করে তাঁরা কর্মসূচির ঘোষণা দেন। তাঁরা রাস্তায় না এসে আরডিএ মার্কেটের ভেতর অবস্থান করে তাঁদের কর্মসূচি পালন করেছেন। সরকারিভাবে যে নির্দেশনা, তার কোনো ব্যত্যয় ঘটানো হলে, আইনে যা আছে তার সবটুকুই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রয়োগ করবে।