বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে কঠোর লকডাউনে শ্রমজীবী কর্মহীন নিম্ন আয়ের মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাবন করছে। কাজ নেই টাকা নেই। ধার দেনা করে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তাদের । কঠোর লকডাউনে সবচেয়ে অহসহায় জীবন যাপন করছে আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দারা। এ লকডাউনে এরা পায়নি কোন সহযোগীতা। উপজেলার বলেশ্বর নদীর তীর ঘেষা হোগলাপাশা ইউনিয়নের হোগলাপাশা আশ্রয়ন কেন্দ্রটি। এ আশ্রয়ন কেন্দ্রটি ২০০০ সালে ৪ একর জমির ওপর নির্মিত হয়। এখানে বসবাসকৃত ৬টি ইউনিটের ৬০টি পরিবার বসবাস করছে। এখানে বেশির ভাগ মানুষ বয়োবৃদ্ধ। তারপরও এদের কেউ ভ্যান চালিয়ে , মুটে খেটে ও দিনমজুরি করে দিন কাটে। কেউবা পরের ক্ষেতে কৃষাণ খাটে। আশ্রয়ন প্রকল্পের আশ্রিত প্রায়ই মহিলারা পরের বাড়ি ঝি এর কাজ করে। এ নিয়ে যা উপার্জন করে তা দিয়ে অর্ধাহার অনাহারে দিন কাটে তাদের। একদিকে করোনার ভয়াল থাবা অপরদিকে লকডাউন ও কঠোর লকডাউন এসব খেটে খাওয়া মানুষের কাজ বন্ধ। ঘরে বসে দিন কাটে তাদের। রিক্সা নিয়ে রাস্তায় বের হতে পারছেনা। করোনার সংক্রমন রোধে মহিলাদের ঝি এর কাজ বন্ধ করে দিয়েছে মালিকরা। ঘরে বসে খাওয়ার জন্য নেই এক মুঠো চাল। ধার দেনা করে দিন কাটছে তাদের । এখন আর কেউ তাদের ধারও দিতে চায়না। পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে এ পরিবারগুলো। আশ্রয়নের বাসিন্দা রিক্সা চালক কবির হাওলাদার(৪৮) তার দুই ছেলে ১ মেয়ে স্ত্রী নিয়ে খুবই কষ্টে দিনযাপন করছেন। সোহেল শেখ(৩৮), মজিদ পাইক(৬০), মমতাজ বেগম(৪৫), আবু সৈয়দ পাইক(৪০), হাজেরা বিবি(৩৮) সহ একাধিকরা বলেন, রিক্সা-ভ্যান চালিয়ে অন্যের বাড়িতে ঝিঁ-এর কাজ করে ছেলে মেয়েদের নিয়ে কোন মতে দু’মুটো খেয়ে পড়ে দিন যেতো। লকডাউনে তাও বন্ধ হয়ে গেছে। হোগলাপাশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান মো. রেজাউল ইসলাম নান্না জানান, হোগলাপাশা আশ্রয়ন কেন্দ্রে ৬০টি পরিবার কঠোর লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়েছে। অনাহার অর্ধাহারে দিন কাটছে তাদের। এ লকডাউনে আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দাদের খাদ্য সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন। মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমজীবী মানুষের করোনার সহায়তার বরাদ্ধ ইতোমধ্যে এসে পৌছেছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অপেক্ষা মাত্র।