বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫১ অপরাহ্ন

দুর্গাপুরে কোরবানীর গরু নিয়ে বিপাকে খামারিরা

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় রবিবার, ১১ জুলাই, ২০২১

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার অনেক গরু খামারিগন ঈদুল আজহায় ভালো দামে গরু বেচে লাভের মুখ দেখার আশা করে থাকেন। প্রতি বছরের মতো এবারও তাই হাজার হাজার গরু মোটাতাজা করেছিলেন তারা। কিন্তু এ বছর ঈদের আগে লাগাতার লকডাউন, গোখাদ্যের সংকট এবং সাপের ভয়ে আশা ভঙ্গের শঙ্কায় ভুগছেন খামারি ও কৃষকরা। খাদ্যের অভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় গরুর ভালো দাম পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে তাদের ভেতর। রোববার বিকেলে সাংবাদিকদের এমনটাই জানালেন গরু ব্যবসায়িগন। এ নিয়ে সরেজমিন ঘুরে জানাগেছে, উপজেলার চন্ডিগড়, কুমুদগঞ্জ, বালিচান্দা, কাকৈরগড়া, গাঁওকান্দিয়া এবং ঠাকুরবাড়ীকান্দা গ্রামের খামারিগন দেশি প্রযুক্তিতে মোটাতাজা করা প্রায় হাজারো গরু নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখছিলেন। আশা করেছিলেন কোরবানির ঈদে গরু গুলো বিক্রি করে তার খামারের পরিধি আরও বাড়াবেন। কিন্ত চলমান লকডাউন এবং গো-খাদ্যের সংকটে তাদের স্বপ্ন এখন অনেকটাই ভেঙ্গে গেছে। এমন হতাশা এখন ভর করেছে উপজেলার কৃষক-খামারির চোখেমুখে। ওই এলাকার খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বন্যার কারণে এখানে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। তার উপর নতুন করে সরকার লকডাউন দিয়েছেন। গরু নিয়ে শহরে যাওয়া হবেনা আমাদের। সারাদেশের যোগাযোগ বন্ধ থাকার কারনে কোন প্রকার ব্যপারিও আসছেনা গরু কিনতে। চাহিদা মত খাদ্য দিতে না পারায় অনাহারে দুর্বল হয়ে পড়ছে গরু গুলো। সরকারিভাবে ত্রাণ, শুকনা খাবার বিতরণ করা হলেও তা চাহিদার চেয়ে অনেক কম। এছাড়া এলাকাতে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় এবং লকডাউন চলমান থাকায় কোরবানিতে অনেকেরই আগ্রহ কমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে গরু, ছাগল ও ভেড়ার দামও কমে যেতে পারে। তাই আসন্ন ঈদুল আজহায় লাভ তো হবেই না বরং লোকসানের আশঙ্কা করছেন দুর্গাপুর উপজেলার অনেক কৃষক ও গরু খামারিগন। এ নিয়ে বিভিন্ন এলাকার খামারি জুয়েল মিয়া, প্রনব সরকার, শাহাবউদ্দিন, আজিজুর রহমান, কাবিল উদ্দিন সহ ঠাকুরবাড়ীকান্দা গ্রামের আব্দুল হাকিম বলেন, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এবং নিজের জমানো টাকা দিয়ে প্রতি বছই ষাড় গরু কিনে দেশীয় পদ্ধতিতে মোটা তাজা করে ঈদুল আযহাতে বিক্রি করি। অত্র এলাকায় ইতোমধ্যে পাহাড়ী বন্যা দেখা দিলেও বর্তমানে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় গরু গুলোকে বিভিন্ন স্থানে গাছের সাথে বেঁধে রেখেছি। প্রয়োজনীয় গো-খাদ্যের অভাবে আমাদের গরু গুলোও শুকিয়ে যাচ্ছে। দেড়শ’ টাকা পনপনের খড় এখন কিনতে হচ্ছে ৫০০ টাকায়। এতো দাম দিয়ে খড় কিনে গরুকে খাওয়ানো আমাদের মতো কৃষকের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাড়িঁয়েছে। আগামী সপ্তাহে যদি লকডাউন ছেড়ে দেয় তাহলে স্থানীয় হাটে বা শহরের কোন হাটে বিক্রি করে হয়তে কোন রকম চালান উঠাতে পারবো। কোরবানীর হাট নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান এ প্রতিনিধি কে বলেন, বর্তমান করোনা প্রেক্ষাপটে অন্যান্য এলাকার চেয়ে অত্র উপজেলায় দিন দিন আক্রান্তের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকার ঘোষিত লকডাউন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোথাও কোন কোরবানীর হাট বসানো যাবেনা। খামারীদের মহান আল্লাহর উপর ভরসা রেখে দেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে বৈর্য্য ধরতে হবে। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসন থেকে বিভিন্ন এলাকায় বিনামুল্যে গো-খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com