ভারতে আটকে পড়া আরও ১২৮ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে মঙ্গলবার বিকালে তারা দিল্লি থেকে ঢাকা এসে পৌঁছান।
এর মাধ্যমে ভারতের বিভিন্ন শহরে চিকিৎসা ও অন্যান্য উদ্দেশ্যে এসে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের দেশে প্রত্যাবর্তনের ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় পর্যায় সম্পন্ন হয়েছে। এই দুই পর্যায়ে দুই সহস্রাধিক আটকে পড়া বাংলাদেশি আকাশপথে দেশে ফিরেছেন।
মঙ্গলবার দিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, আকাশপথের পাশাপাশি সড়ক পথেও প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া চালু রয়েছে। লকডাউন শুরু হওয়ার পর বিভিন্ন স্থল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ মিশনসমূহের সহায়তায় দেশে ফেরা যাত্রীর সংখ্যা ৫০০। মঙ্গলবার দিল্লি থেকে সড়ক পথে ২৬ জন বাংলাদেশি বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরেছেন। এ ছাড়া দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ ও তামিলনাড়ুসহ বিভিন্ন দূরবর্তী রাজ্য থেকে আগামী কয়েক দিনে সড়ক পথে শতাধিক বাংলাদেশি দেশে ফেরার অনুমোদন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
সড়কপথে দেশে ফিরতে ইচ্ছুক যাত্রীদের উদ্দেশ্যে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তাদেরকে অবিলম্বে হাইকমিশনের বিজ্ঞপ্তি-৯ (৩০ এপ্রিল ২০২০) অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের জন্য হাইকমিশনে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। সড়কপথে দীর্ঘ ভ্রমণের ক্ষেত্রে রোগীদের শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় রেখে চিকিৎসকের অনুমতি গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ ট্রেনযোগে রেলপথে ভ্রমণের ব্যবস্থার জন্য ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে বিষয়টি পদ্ধতিগত কারণে সময়সাপেক্ষ হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
এতে আরও বলা হয়েছে, আকাশপথে প্রত্যাবর্তনের তৃতীয় পর্যায়ের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কলকাতা, মুম্বাই, দিল্লি, ও চেন্নাই ছাড়াও বেঙ্গালুর থেকে বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য হাইকমিশনের প্রস্তাব দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। পর্যাপ্ত যাত্রী সংখ্যা ও অনুমোদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটগুলো পরিচালনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে (তবে চূড়ান্ত তারিখ সামান্য পরিবর্তিত হতে পারে)।
কলকাতা ১০ মে (রোববার), মুম্বাই ১২ মে (মঙ্গলবার), বেঙ্গালুরু ১৩ মে (বুধবার), ১৫মে (শুক্রবার) দিল্লী ১৪ মে বৃহস্পতিবার।
“এছাড়াও পর্যাপ্ত যাত্রী সংখ্যা ও অনুমোদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স আগামী ০৮-১০ মে ও ১৩ ১৪ মে তারিখসমূহে চেন্নাই থেকে মোট পাঁচটি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করবে।এর প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। আগ্রহী যাত্রীদের সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সড়ক ও আকাশপথে ভ্রমণেচ্ছু প্রত্যেক যাত্রীর অবশ্যই “কোভিড- ১৯ মুক্ত” বা “কোভিড -১৯ উপসর্গমুক্ত সনদ থাকতে হবে। সব যাত্রীকে বাংলাদেশে পৌঁছানোর পর পুনরায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে এবং বাধ্যতামূলক ২ (দুই) সপ্তাহ কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
“যেসব বাংলাদেশি নাগরিক আইনগত জটিলতায় পড়ে দেশে ফিরতে পারছেন না বা স্থানীয় সরকারের ব্যবস্থাপনায় কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন তাদের বিষয়টি নিয়ে হাই কমিশন সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে। একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠিত একটি বিশেষ সেল বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়া সদস্যদের তালিকা প্রস্তুত করে সম্ভাব্য সব উপায়ে যোগাযোগ রক্ষা করছে। অনুরূপ পরিস্থিতিতে টিকে থাকাদের জন্য সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দূতাবাসসমূহ কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপের সঙ্গে সংগতি রেখে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। স্বাগতিক দেশের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হাইকমিশন যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশ সরকার প্রবাসে অবস্থানরত সব নাগরিকদের কল্যাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সর্বদাই সচেষ্ট রয়েছে।”
এমআর/প্রিন্স