করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী, বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলামের ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকারে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন, সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। গত বৃহস্পতিবার এশার নামাজের পর ধানমন্ডি ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে তাকে রায়ের বাজার কবরস্থানে দাফন করা হয়।
শোকবাণী: বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলামের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান।
সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক শোকবাণীতে তিনি বলেন, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবী ও বাংলাদেশ ল’য়ার্স কাউন্সিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। আইনজীবী হিসেবে তিনি মানুষের সেবা করে গিয়েছেন। তিনি দেশে আইনের শাসন, ন্যায় বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আজীবন সংগ্রাম করেছেন। আমি তার ইন্তেকাল গভীর শোক প্রকাশ করছি।
শোকবাণীতে তিনি আরো বলেন, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একজন প্রবীণ নেতা ছিলেন। তিনি কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদসহ বিভিন্ন স্তরে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তার ইন্তেকালে আমরা ইসলামী আন্দোলনের একজন নিবেদিত প্রাণ দাঈকে হারালাম। ইসলামী আন্দোলনের প্রচার ও প্রসারে তার অনেক অবদান রয়েছে এবং তিনি ন্যায় ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে গিয়েছেন। মহান রবের নিকট বিগলিত চিত্তে দোয়া করি, তিনি যেন তার জীবনের সকল নেক আমল কবুল করে তাকে শাহাদাতের মর্যাদা দান করেন এবং তার শোকাহত পরিবার-পরিজনদেরকে এ শোক সহ্য করার তাওফিক দান করেন। আমীন। এদিকে এক শোক বাণীতে বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এবং সেক্রেটারি জেলারেল যথাক্রমে অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দীন সরকার ও অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ এক শোকবাণীতে বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী, বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিল-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম ছিলেন, বিশিষ্ট আলেম, ইসলামী চিন্তাবিদ ও পেশাগত জীবনে একজন দক্ষ-যোগ্য আইনজীবী ছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে শহীদ আলী আহসান মুহাম্মদ মোজাহিদের ল’ইয়ার হিসেবে আইনী লড়াই করেছেন। শহীদ নেতৃবৃন্দের সাথে তার আন্তরিক সম্পর্ক ছিল। তিনি আইন বিষয়ক একটি গবেষণামূলক জার্নালের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। শিক্ষা বিস্তার ও ইসলামী অর্থনীতি বাস্তবায়নে বিশেষ করে ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আমরা তার ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করছি।
শোকবাণীতে তারা আরো বলেন, তিনি তার পেশাগত জীবনে দক্ষতা, সৃজনশীলতা এবং প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গিয়েছেন। সর্বোপরি ইসলামের সুমহান আদর্শ প্রতিষ্ঠা, আইনের শাসন, ন্যায় বিচার এবং ইনসাফপূর্ণ সমাজ কায়েমের জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গিয়েছেন। মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন তার জীবনের সকল নেক আমল কবুল করুন, গুনাহখাতা ক্ষমা করুন এবং তার মৃত্যুকে শহীদের মর্যাদা দান করুন। আমরা তার পরিবার-পরিজন, আইন অঙ্গণে তার সহকর্মী ও শুভাকাক্সক্ষীদের উত্তম ধৈর্য ধারনের তৌফিক দান করুন এবং রাব্বুল আলামীন তার শূন্যতা পূরণ করে দিন। আমীন। এদিকে অ্যাডভোকেট মাওলানা নজরুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
এক শোকবাণীতে মহানগরী উত্তর আমির বলেন, অ্যাডভোকেট মাওলানা নজরুল ইসলামের মৃত্যুতে আমরা একজন প্রবীণ আলেমে দ্বীন ও ইসলামী আন্দোলনের নিবেদিত প্রাণ অগ্রসৈনিককে হারালাম। তিনি আইনঅঙ্গণে নিজের যোগ্যতা, নিষ্ঠা ও প্রজ্ঞার স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি কুরআন-সুন্নাহর আলোকে দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার স্বপ্ন দেখতেন। আজীবন এ লক্ষেই কাজ করে গেছেন। তার মৃত্যুতে ইসলামী আন্দোলনে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা সহজেই পূরণীয় নয়। মহানগরী আমির মরহুমের রুহের মাগফিরাত করে তাকে জান্নাত দানের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া করেন। তিনি তার শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং তাদের ধৈর্যধারনের জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে তাওফিক কামনা করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি