গ্রাহক সংশ্লিষ্ট খাত হিসাবে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি নিয়ে মানুষের অভিযোগের অন্ত নেই। অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা থাকলেও এসব জায়গায় গ্রাহক তেমন অভিযোগ করেন না। অনেকেই বলছেন কিভাবে কোন প্রক্রিয়ায় অভিযোগ করতে হয় গ্রাহকরা আসলে তা জানেনই না। আবার জানলেও অভিযোগ করে উল্টো হয়রানির ভয়ও আছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মানুষ অভিযোগ নিয়ে এলে যদি শুনানি হতো এতে পক্ষ-বিপক্ষ উভয়ের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সুযোগ থাকতো। যাতে করে সেবার মান বাড়তো।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র বলছে, অভিযোগ প্রতিকার সেল নামে তাদের একটি শাখা রয়েছে। যেখানে বিভাগের সিনিয়র কর্মকর্তা দায়িত্বে রয়েছেন। কিন্তু বছরের বেশিরভাগ সময় সেখানে কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেন না। ফলে কার্যত তেমন শুনানির আয়োজন করতে হয় না। এতে করে মানুষ খুব একটা উপকৃত হচ্ছেন না। যদি গ্রাহকরা সরাসরি তাদের অভিযোগ মন্ত্রণালয় দাখিল করতো তাহলে এই সেলটি কার্যকর হতো। বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, অনলাইনে গিয়েই যে কেউ এই অভিযোগ জানাতে পারে। অভিযোগ পাওয়ার পর এটি শুনানি করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এক্ষেত্রে কোনও পক্ষ শুনানিতে সন্তুষ্ট না হলে তিনি আপিল করতে পারবেন।
বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে জুলাই মাসে ১টি, সেপ্টেম্বর মাসে ১টি, অক্টোবর মাসে ৭টি, নভেম্বর মাসে ৩, ডিসেম্বরে ৩, জানুয়ারিতে ২, ফেব্রুয়ারিতে ১টি আবেদন, সব মিলিয়ে ১৮টি আবেদন জমা পড়ে। বছরের অন্যান্য মাসে কোনও আবেদনই জমা পড়েনি। অথচ এই অর্থবছরে অতিরিক্ত বিল করার অভিযোগে লাখ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎ অফিসে জড়ো হতে দেখা যায়।
সূত্র বলছে, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী অভিযোগ গ্রহণের পর নিষ্পত্তির জন্য মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ও সংস্থা ভিত্তিক ফোকাল পয়েন্ট বা নির্দিষ্ট ব্যক্তি নির্ধারণ করা হবে। তারাই একটি সহজ কৌশল নির্ধারণ করবেন। অভিযোগ নিষ্পত্তির বিষয়ে যে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে জানাতে হবে। এই সংক্রান্ত সরকারের একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। সরকার কেন্দ্রীয়ভাবে অভিযোগ প্রতিকারের ব্যবস্থার জন্য একটি ওয়েবসাইটও রয়েছে। সেখানে ব্যক্তি নিজে গিয়ে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন অথবা নাম পরিচয় গোপন রেখেই অভিযোগ করতে পারেন।
এ বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক বি ডি রহমত উল্লাহ বলেন, এখন আমাদের গ্রাহক সংখ্যা ৪ কোটি। আর অভিযোগের এই হাল। এটা একেবারেই অবিশ্বাস্য। আমরা তো আর সোনার দেশে থাকি না যে কোনও অভিযোগই আসবে না। আর তাছাড়া গত বছর বিদ্যুৎ বিল নিয়ে প্রচুর ভোগান্তির শিকার হয়েছিল গ্রাহকরা। এই অবস্থায় এটা জাস্ট একটা আইওয়াশ। তিনি বলেন, এই সেলকে কার্যকর করতে হলে এই সেল যে আছ সেটি প্রচার করতে হবে। আর যে পদ্ধতিতে সমাধানের কথা বলা হয়েছে তাও অনেক দীর্ঘমেয়াদি। সেলের অভিযোগের ওখানেই কিভাবে সমাধান হচ্ছে তা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ থাকা দরকার বলে তিনি মনে করেন।