শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::

মিটফোর্ডে অধিকাংশ রোগীর ডেঙ্গু পরীক্ষা বাইরে করানোর অভিযোগ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৬ জুলাই, ২০২১

রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (মিটফোর্ড) প্রতিদিন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১০-১৫ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এ হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার সব ব্যবস্থা থাকলেও অধিকাংশ রোগীকে হাসপাতালের বাইরে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। বিভিন্ন বেসরকারি মেডিকেল সার্ভিসের মানুষকে হাসপাতালের ডেঙ্গু রোগীদের রক্তের স্যাম্পল সংগ্রহ করতেও দেখা গেছে। যারা এসব স্যাম্পল সংগ্রহ করছেন তারা বলছেন, ডাক্তারের আদেশে তারা রোগীর স্যাম্পল কালেকশন করছেন। ভর্তি রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতালে পরীক্ষার সরঞ্জাম থাকা সত্ত্বেও ডাক্তাররা লাভের আশায় বাইরে পরীক্ষা করাতে পাঠাচ্ছেন।
গতকাল সোমবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের চারটি ইউনিটের মেডিসিন বিভাগে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা চলছে। তিন নম্বর ভবনের ষষ্ঠ তলায় মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসের এক ব্যক্তি ডেঙ্গু রোগীর রক্তের স্যাম্পল কালেকশন করছেন। রোগী ও তার স্বজনরা তাকে বারবার বলছেন কেন এত বেশি টাকা নিচ্ছেন। তারপরও তিনি কারও কথা কর্ণপাত করছেন না। রোগী ও তার স্বজনরা অভিযোগ করছেন, বেশি লাভের আশায় ডাক্তাররা বাইরে পরীক্ষা করতে বলছেন। সোলেমান পরিচয় দিয়ে মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসের স্যাম্পল কালেকশন করা ওই ব্যক্তি বলেন, ডাক্তাররা আমাকে রোগীদের রক্তের স্যাম্পল কালেকশন করতে বলেছেন। তাদের কথায় আমি হাসপাতালে রোগীদের রক্তের স্যাম্পল কালেকশন করছি। হাসপাতালে প্রবেশ করে রক্ত কালেকশন করা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, শুধু আমি না, এখানে অনেক বেসরকারি লোক আছেন তারা রোগীদের রক্তের স্যাম্পল কালেকশন করেন। আমরা ডাক্তারের আদেশেই রোগীদের রক্তের স্যাম্পল কালেকশন করি।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত নুর ইসলাম বলেন, ‘আমি শনিবার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি হই। ভর্তির সময় হাসপাতাল থেকে আশি টাকার একটা পরীক্ষা দেয়। এরপর ডাক্তার দেখাতে এসে আমাকে পরীক্ষা বাইরে করাতে বলেন। উপায় না পেয়ে আমি বাইরে পরীক্ষা করি। বাইরে তিনদিনে পরীক্ষার পেছনে আমি ২০ হাজার টাকার মতো খরচ করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ডাক্তার যখন পরীক্ষা দেন তখন তার পেছনে একজন বাইরের হাসপাতালের লোক থাকেন। ডাক্তার তার মাধ্যমে পরীক্ষা করাতে বলেন। হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার সব কিছু থাকলেও ডাক্তাররা বাইরে যেতে বলেন। এতে যাদের আর্থিক অবস্থা দুর্বল তাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত শামীমের বড় ভাই রায়হান পরিচয় দিয়ে আরেকজন বলেন, আমরা গরিব মানুষ। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে আমাদের বাইরে পরীক্ষা করতে দিচ্ছে। হাসপাতালে সব পরীক্ষা থাকা সত্ত্বেও ডাক্তাররা আমাদের বাইরে পরীক্ষা করতে বলছেন। বাইরে কেন পরীক্ষা করবো- তা প্রশ্ন করলে তারা আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। তিন নম্বর ভবনের ষষ্ঠ তলার ডিউটিরত চিকিৎসক রবি বলেন, অনেক রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাদের দ্রুত পরীক্ষা করতে বলা হয়। এ সময় রোগীর স্বজনরা বাইরে থেকে পরীক্ষা করে আনেন। আমরা বেসরকারি হাসপাতালের কাউকে এখানে প্রবেশ করে স্যাম্পল কালেকশন করতে বলি না। তারা নিজ থেকে এসে রোগীদের কাছ থেকে স্যাম্পল কালেকশন করেন। মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মো. রশিদ-উন-নবী বলেন, আগের বছরের তুলনায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কম। আমাদের হাসপাতালে প্রতিদিন ১০-১৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আমাদের হাসপাতালে এখনো কোনো রোগী মারা যায়নি। ডেঙ্গু রোগীদের অনেককে বাইরে পরীক্ষা করাতে হয় এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অনেকে দ্রুত সময়ে রিপোর্ট পাওয়ার জন্য বাইরে পরীক্ষা করান। আমাদের হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সব ধরনের পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও যেসব রোগীর শারীরিক অবস্থা খারাপ তারা দ্রুত রিপোর্টের জন্য বাইরে পরীক্ষা করেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com