ঢাকার ধামরাইয়ে গাজী খালি নদীর প্রচন্ড স্রোতের কারনে ভেঙে নদীর গর্ভে বিলীন হচ্ছে কয়েক টি মুদির দোকান সাথে হুমকিতে রয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২ শত বছরের ঐতিহ্যবহনকারী একটি বটগাছ। নদীর পানি বৃদ্ধি ও প্রচন্ড স্রোত অব্যাহত থাকায় যাতে পাশে বসত বাড়ি, স্কুলের বড় কোন ক্ষতি না হয় সে জন্য স্থানীয়রা বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গনের হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে। তবে ভাঙ্গন প্রতিরোধে যদি কোন ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে স্কুল, বাজারসহ একাধিক স্থাপনা ঝুঁকির মধ্যে থাকবে। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সূতিপাড়া ইউনিয়নের নওগাও গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে চলেছে গাজী খালি নদী। দির্ঘদিন মানুষ কোন সেতু না থাকায় বাঁশের সাকু দিয়েই পারাপার হতো। কিন্তু সম্প্রতি ঔই নদীর উপর দিয়ে টেকসই সেতু তৈরি করা হচ্ছে। তবে খুবই ধীরগতিতে। সেতুটি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারীতে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তা আজও সমাপ্ত হয় নি।তার উপর নওগাঁও এলাকার দক্ষিণে বাথুলি গ্রামে আহাদব্রিকস, নূর ব্রিকস ও কেবিসি ব্রিকস নামে তিনটি ইটের ভাটা রয়েছে। যাদের ইট ভর্তি গাড়ি ঔই নদীর উপর দিয়ে মাটি ভরাট করে বিকল্প রাস্তা নির্মান করে মালামাল আনা নেওয়া করে থাকে। আর সেতুর কাজতো চলছেই।কিন্তু বর্তমানে নদীর স্রোত বেড়ে যাওয়ার ফলে একটি মাত্র চুঙি দিয়ে পানি যাওয়ায় প্রচন্ড স্রোত হচ্ছে। যার ফলে একটি মুরগির দোকান, একটি ডেকোরেটরের দোকান, কয়েকটি মুদির দোকানসহ বেশ কিছু বড় গাছ নদীর ভেঙে নদীতে পড়ে গেছে। সেই সাথে ২ শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বট গাছের চারপাশও ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময় পরে গিয়ে নদীতে বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সাথে প্রচন্ড ঝুঁকিতে রয়েছে নওগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও। স্থানীয়রা জানান, যদি সেতুর পাশে বিকল্প রাস্তার মাঝে কেটে না দেওয়া হয় তাহলে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তারা আরো বলেন, বিষয়টি আমরা স্থানীয় চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজাকে জানিয়েছি। তিনি এসে দেখে গেছেন। তিনি বিকল্প রাস্তার মাঝখানে কেটে দিতে বলেছেন। তাতে ক্ষতির মুখে কাউকে পরতে হবে না। কিন্তু সেতুর ঠিকাদারদের সাথে ইট ভাটার মালিকরা আতাত করে সাইড রাস্তা তৈরি করেছে। তাদের ইটের ট্রাক যাওয়া আসা করে সব সময়। যদি রাস্তা কেটে পানি বের হওয়ার ব্যবস্থা করা হয় তাহলে ইটের ট্রাক আর বের হতে পারবে না। তাই বিলম্ব করা হচ্ছে। দোকান ভেঙে পরার পিছনে ইট ভাটার মালিকরাও দায়ী। বিলীন হওয়া মুরগির দোকানের মালিক আমজাদ হোসেন বলেন, স্রোতের কারনে আমার দোকান নদীতে ভেঙে পড়েছে। প্রায় ২শত মুরগী সাথে সাথেই মারা গেছে। যদি এভাবে চলতে থাকে তাহলে বাজারের আরো দোকান কিছু বড় গাছ,বট গাছ এমনকি স্কুলেরও বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই বালু ভর্তি জিও ব্যাগ দিয়ে বাধের ব্যবস্থা করছি। ৫০নং নওগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রসুল বলেন, হঠাৎ করে গাজী খালি নদীর পানি বেড়ে প্রচন্ড স্রোতের কারণে বাজারের দোকান নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তাই আমি বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েছি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। এদিকে ব্রিজ নির্মাণের তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বলেন, রাস্তাটা আমরা করি নি।করেছে ইট ভাটার মালিকরা তাদের সুবিধার জন্য। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমাধান করলে ভালো হয়। তাছাড়া ইউএনও বরাবর লোকজন আবেদন করলে দ্রুত কাজ সমস্যা সমাধান হবে। এ বিষয়ে নওগাঁও বাজার বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজ বলেন, নদীর উপর সাইড রাস্তা ইট ভাটার মালিকরা ভাঙতে দেয় না।তাদের প্রভাব বেশি। দুটি দোকান নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। একটি মুরগির দোকান আরেকটি ডেকোরেটরের দোকান। এতে আড়াইশত মুরগী এবং দুই শত চেয়ার দোকানের সাথে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আমরা ক্ষতি পূরণের জন্য ইট ভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা করবো।তাদের কারনে এ ক্ষতি হয়েছে। রাস্তা কেটে না দিলে বাজার নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যানও আমাদের দুই দিন ঘুরিয়েছে।