মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

‘তোরা মোর বিচার করে দেন বাহে’

মোসলেম উদ্দিন (হিলি) দিনাজপুর :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১০ আগস্ট, ২০২১

নাতির অত্যাচারে ঘর ছাড়া দিনাজপুরের হিলির ৯০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা আমেনা বেগম। অমানবিক অত্যাচার আর শেষ সম্বল টুকু হারিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও’র কাছে ন্যায্য বিচারের আশায় ঘুরছেন তিনি। হাকিমপুর (হিলি) উপজেলার আলীহাট ইউনিয়নের কুশাপাড়া গ্রামের মৃত আমজাদ আলীর স্ত্রী আমেনা বেগম(৯০)। প্রায় ৩০ বছর আগে তার স্বামী মারা যায়, রেখে যায় একটি মেয়ে সন্তান। অনেক কষ্টে মেয়েটিকে বড় করে এবং বিয়ে দেন তিনি। পরে মেয়ে আর নাতি-নাতনি নিয়ে স্বামীর রেখে যাওয়া তিন শতকের উপর থাকেন তারা। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস একমাত্র মেয়েটিও মারা যায়। আবারও কষ্ট করে নাতি-নাতনিকে মানুষ করেন এই বৃদ্ধা মহিলা। বৃদ্ধা আমেনার এখন অনেক বয়স হয়ে গেছে, চলতেফিরতে পারেন তেমন, লাঠির উপর ভর করে কোন রকম চলেন তিনি। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা হয়েছে তার। নাতি শাহা আল বৃদ্ধা আমেনা বেগমকে বিভিন্ন আশা দেখিয়ে তার শেষ সম্বল টুকু বাড়িভিটে নিজ নামে লেখে নেন। কথা ছিলো যতদিন তিনি বেঁচে থাকবেন ততিদন নাতি শাহা আলম তার সকল ভরণপোষণ চালিয়ে যাবে। কিন্তু কোন শর্তও রাখছেন না নাতি। বৃদ্ধ বয়সে এখন প্রায় সময় তাকে অনাহারে থাকতে হয়। খাদ্য-খাবার আর পোশাকাদি দেয় না নাতি। আবার বাড়ি থেকে বারংবার বের করেও দেওয়া হয় তাকে। শুধু তাই নয় বৃদ্ধা আমেনাকে শারীরিক অত্যাচারও করে নাতি, বহুবার গলা ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বেড় করে দিয়েছে পাষ- নাতি শাহা আলম। স্বামী আর একমাত্র মেয়ে হারিয়ে আজ স্বামীর ভিটেবাড়ি টুকুও হাত ছাড়া হয়ে গেছে এই বৃদ্ধার। বৃদ্ধ বয়সে সব হারিয়ে আজ দিশেহারা আমেনা বেগম। ন্যায্য বিচার আর স্বামীর ভিটেবাড়ি ফিরে পাবার আশায় বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তর সহ ঘুরছেন তিনি মানুষের দ্বারেদ্বারে। বৃদ্ধা আমেনা বেগম বলেন, মোর তোরা বিচার করে দেন? মুই আর অত্যাচার সহ্য করবা পারছু না। নাতি কইছে খাওন দিবি, কাপড়া দিবি, যতিদন মুই বাঁচমু সব দিবি। এই বলে মোর তিন শতক জায়গা-কুনা লিখে নিছে। এখন ক্যাছুই (কিছুই) দেয় না। ঘাড়ধাক্কা দিয়ে মোক বায়ীত্তে (বাড়ি থেকে) বেড় করে দেছে। তোরা এর বিচার করে দেন, মোর স্বামীর ভিটেবাড়ি নিয়ে দেন বাহে? উপজেলার ৩নং আলীহাট ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রহিম উদ্দিন জানান, ঐবৃদ্ধা মহিলাকে আমি চিনি এবং জানি। তার নাতি তার বাড়ির জায়গাটুকু লিখে নিয়েছে এবং তার কোন ভরণপোষণ দেয় না। উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও মহোদয় আমাকে বৃদ্ধা আমেনার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আমি তার বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে সমাধানের ব্যবস্থা করবো। হাকিমপুর (হিলি) থানা অফিসার ইনচার্জ ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, আমি ঐবৃদ্ধা মহিলার বিষয়ে জানতাম না, এখন জানলাম। বিষয়টি অমানবিক, উনি একজন খুবি বয়স্ক মানুষ। আমি অবশ্যই সরেজমিনে তদন্তের জন্য পুলিশ পাঠাবো এবং এর আইনুগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো। হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নুর-এ আলম জানান, আলীহাট ইউনিয়নের কুশাপাড়া গ্রামের বয়স্ক আমেনা বেগম তার বিচার চাইতে আমার নিকট এসেছিলেন। আমি তৎক্ষণাৎ উক্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে অবগত করেছি। চেয়ারম্যান বিয়ষটি তদন্ত সাপেক্ষে সমাধান করবেন এবং প্রয়োজনে আমি নিজেই ঐবৃদ্ধার বাড়িতে গিয়ে তার সমস্যার সমাধান করবো। এবিষয়ে হাকিমপুর উপজেলার চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ হারুন বলেন, আমার কাছে কুশাপাড়া গ্রামের বৃদ্ধা মহিলা আমেনা বেগম তার নাতির বিষয়ে অভিযোগ করেছে। তিনি একেবারেই বৃদ্ধ মানুষ, বিষয়টি অমানবিক এবং দুঃখজনক। আমি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছি এর সঠিক ব্যবস্থা নিতে, প্রয়োজনে ইউএনও’কে নিয়ে আমি সরেজমিনে যাবো।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com