মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে ১৭ মাস বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রায় দেড় বছরে দফায় দফায় পেছানোর পর, করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আগামী মাসেই স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে গতকাল বুধবার মিন্টো রোডের বাসভবনে একান্ত আলাপচারিতায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সাংবাদিকদের বলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত স্কুল-কলেজ খুলছে না। তবে সেপ্টেম্বরেই স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে সরকারের। এছাড়া এখনই অটোপাসের চিন্তা নয়, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নভেম্বর -ডিসেম্বরে পরীক্ষা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। এর আগে গত ৬ আগস্ট শিক্ষাবিষয়ক সাংবাদিকদের একটি সংগঠন আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানান, সরকারি পর্যায়ের শিক্ষকরা করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছেন। অপর দিকে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩ লাখ ৬৩ হাজার ২২২ শিক্ষক ও কর্মচারীর মধ্যে দুই লাখ ৭৮ হাজার ৪২৬ জনই ইতোমধ্যে টিকার আওতায় এসেছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৩৪ হাজার শিক্ষকের মধ্যে ভ্যাকসিন নিয়েছেন প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষক। এক সপ্তাহের মধ্যে বাকি সব শিক্ষক করোনা ভ্যাকসিনের আওতায় আসবে বলে জানান তিনি।
এ সময় শিক্ষামন্ত্রী আরো জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষার্থী প্রথম ডোজ এবং ৬ হাজার ৭২ জন দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিষয় সামনে রেখেই শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার তাগিদ রয়েছে। সরকারের ঘোষণা অনুসারে, আগামী নভেম্বর ও ডিসেম্বরে এই দুটি পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী মাসে স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার পর পরীক্ষার্থীরা প্রায় তিন মাস শ্রেণীকক্ষে গিয়ে সরাসরি ক্লাস করার সুযোগ পাবে। এতে পরীক্ষার প্রস্তুতি সহজ হবে বলেই দ্রুত স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এর আগে আরো দুই দফায় প্রস্তুতি নিয়েও করানোর সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হয়নি।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দেয়। এরপর ১৭ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা হয়। এ পর্যন্ত গত ১৭ মাসে দফায় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি বাড়ানো হয়। করোনা সংক্রমণ অব্যাহত থাকায় সবশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান সাধারণ ছুটি আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়।