শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৭ অপরাহ্ন

কৃষি-করোনা সঙ্কটে অর্থনীতির চালিকাশক্তি

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৩ আগস্ট, ২০২১

আবদুল আউয়াল মিন্টু:
সরকার নিজেই ধানের প্রধান ক্রেতা। তবে সরকার একই সময় মিলারদের কাছ থেকে চালও কেনে। একই সাথে ধান-চাল সংগ্রহের এ ব্যবস্থাটি একেবারেই রাজনৈতিক। এই দ্বৈত ব্যবস্থার ফলে কৃষকরা ধানের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন। চালের ক্রয়মূল্য, আনুপাতিক হারে ধান থেকে বেশি। একই সাথে সরকারের চাল কেনার অর্থ হলো প্রান্তিক চাষিদের ন্যায্যমূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত করা। আবার কাগজে কলমে নীতি লিপিবদ্ধ থাকলেও কৃষকরা ধান বিক্রি করতে গেলে মাঠের কর্মকর্তারা বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে গড়িমসি করেন। এ অবস্থা এড়াতে কৃষকদের কাছ থেকে সরকার সরাসরি ধান সংগ্রহ করা উচিত। বিরাজমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে এবং বিশ্বখাদ্য সঙ্কটের সম্ভাবনার আলোকে ধান কেনা কোনো নির্দিষ্ট পরিমাণে সীমাবদ্ধ রাখা ঠিক হবে না। বরং চাষিরা যত পরিমাণ বিক্রয় করতে চান, তার সবটুকুই সরকারের ক্রয় করা উচিত। কোনোভাবেই নির্দিষ্ট করে দেয়া ঠিক হবে না। উপজেলা খাদ্য ও কৃষি কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে প্রতিটি ইউনিয়নে ধান সংগ্রহ করা উচিত। কৃষকদের থেকে সরাসরি ধান কেনার সময় দলীয় মধ্যস্বত্বভোগীদের দূরে রাখতে হবে।
খাদ্য উৎপাদন ও কর্মসংস্থান: যেকোনো দেশের মতোই বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে বসবাসকারী নাগরিকদের খাদ্যের জোগানে গ্রামাঞ্চলের কৃষি উৎপাদন অত্যন্ত জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ। কৃষি উৎপাদনের সাথে গ্রামাঞ্চলের কর্মসংস্থান সম্পর্কিত। এ খাতে দেশের ৫০ শতাংশ কর্মজীবী মানুষ সরাসরি জড়িত। এ ছাড়াও ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কর্মক্ষম মানুষ সরাসরি কৃষি উৎপাদনে জড়িত না থাকলেও তাদের জীবিকা নির্বাহের মূল কর্ম কৃষি খাতনির্ভর। কৃষি খাতের উৎপাদন প্রক্রিয়াকে সচল রাখা ও উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে এসব কর্মজীবী মানুষ ও দিনমজুরদের আয়-উপার্জনের সম্পর্ক জড়িত। অন্য দিকে তাদের আয়-উপার্জনের সাথে খাদ্য কেনার সামর্থ্য জড়িত।
‘খাদ্য নিরাপত্তা’ কেবল খাদ্য ‘উৎপাদন ও সরবরাহ’ বাড়ানো নয়। এর সাথে জড়িত ‘কেনার সামর্থ্য’। বাজারে খাদ্যের সরবরাহ যথেষ্ট থাকলেও সেটি অনেকের নাগালের বাইরে থেকে যাবে কেনার সামর্থ্য না থাকলে। তাই কৃষি উৎপাদন প্রক্রিয়া সচল রাখতে পারলে, বাজারের চাহিদানুযায়ী খাদ্যপণ্য সরবরাহ করা যাবে এবং যারা উৎপাদনের সাথে জড়িত তাদের কেনার সামর্থ্য বাড়বে। এতে সুসংহত হবে জনগণের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা। একই সাথে প্রান্তিক চাষিদের আয় বাড়বে। তাদের জীবনমানে অবনতি হবে না; অন্যথায় বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সহজে বলা যায় যে এর ব্যতিক্রম হলে দারিদ্র্যের হার দ্রুতগতিতে বেড়ে যাবে।
কৃষি খাত ও অভিবাসী শ্রমিক: সাধারণত বিশ্বের যেকোনো দেশে কৃষিকাজে নিয়োজিত ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ অভিবাসী শ্রমিক। অন্য যেকোনো দেশের মতোই বাংলাদেশেও অনেক জেলায় কৃষি শ্রমিকের ঘাটতি আছে। আবার অনেক জেলায় তা উদ্বৃত্ত। অতএব শ্রমিকরা যাতে বাধাবিঘ্ন ছাড়াই এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাতায়াত করতে পারেন তার সুবন্দোবস্ত এবং শ্রমিকের থাকার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের পাঞ্জাবে ফসল সংগ্রহ এবং অন্যান্য কৃষি কার্যক্রমে জড়িত শ্রমিকদের ৭০ শতাংশ হলো অভিবাসী। এসব শ্রমিক সাধারণত বিহার, উড়িষ্যা, উত্তরপ্রদেশ ও আসাম থেকে আসেন। ওই সব রাজ্যে শ্রমিক উদ্বৃত্ত। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। দেশের হাওর অঞ্চল ও অন্যান্য অনেক জেলায় প্রায় ৭০ শতাংশ কৃষিকাজ অভিবাসী শ্রমিক দিয়ে করানো হয়। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, নরসিংদী, ঝালকাঠি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, মুন্সীগঞ্জ ও পটুয়াখালী জেলায় কৃষিকাজে নিয়োজিত ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ হলো অভিবাসী শ্রমিক। দৈনিক বণিক বার্তার (এপ্রিল ১৪) দৃষ্টিতে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ২৬টি জেলায় কৃষি শ্রমিকের ঘাটতি রয়েছে, বাকি ২৯টি জেলায় শ্রমিক উদ্বৃত্ত। হাওর অঞ্চলগুলোতে ধান আবাদ ও সংগ্রহ করতে ৮০ হাজার অস্থায়ী কৃষি শ্রমিকের প্রয়োজন। এভাবেই শ্রমিকরা উদ্বৃত্ত এলাকা থেকে ঘাটতি এলাকায় আসা-যাওয়া করেন। চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ চলাকালে এসব শ্রমিককে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাতায়াতে সরকারকে সহায়তা করা উচিত। তা হলে যেসব এলাকায় শ্রমিকের ঘাটতি আছে সেখানে তারা অনায়াসে যেতে পারবেন এবং চাষিরা খাদ্য উৎপাদনে উৎসাহিত হবেন।
কৃষি শ্রমিকদের সহায়তা: কৃষি শ্রমিকরা এক জেলা থেকে অন্য জেলায় সহজে যাতায়াতের জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পরিচয়পত্র দিতে হবে, যাতে তাদের চলাচলে কোনো বাধাবিপত্তি না থাকে ও চাঁদা দিতে না হয়। দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের (এপ্রিল ২১) সংবাদ অনুযায়ী, ‘শ্রমিকদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা চাঁদা দিতে হয়।’ এ ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধ না করলে ভবিষ্যতে শ্রমিকরা নিরুৎসাহিত হবেন। শ্রমিকের অভাবে ফসল উৎপাদন বিঘ্নিত হবে।
তা ছাড়া শ্রমিকদের উৎসাহ দিতে সরকার আরো অনেক কার্যক্রম চালাতে পারে। যেমন পরিবারপ্রতি অন্তত এক মাসের খাদ্যসহায়তা দেয়া; যাতায়াতের আগে বিনামূল্যে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার বন্দোবস্ত করা; তাদেরকে অস্থায়ীভাবে স্বাস্থ্য বা জীবন বীমার আওতায় আনা। উল্লেখ্য, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গত কয়েক বছরে বজ্রপাতে অনেক অভিবাসী শ্রমিকের মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হয়েছে। জীবন বীমা থাকলে এ ধরনের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তাদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবে; স্কুল বা কলেজ বন্ধ থাকলে তাদের স্কুল প্রাঙ্গণে অব্যবহৃত দালানকোঠায় থাকার ব্যবস্থা করা হবে; ওই সব জায়গায় স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে উদ্বুদ্ধ করা প্রয়োজন; প্রতিদিন তাদের শরীরের তাপমাত্রা মেপে দেখা উচিত; জ্বর, মাথাব্যথা বা কাশির লক্ষণ দেখা দিলে সাথে সাথে আইসোলেশনে নেয়ার বন্দোবস্ত করা ও আইসোলেশনে থাকাবস্থায় তাদের খাওয়া ও সর্ব প্রকার চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা দরকার।
কৃষি শ্রমিকদের দিনপ্রতি মজুরি ঠিক করে দিলে ভালো হয়। কৃষকদের সহযোগিতা ও উৎসাহ জোগাতে সরকারের উচিত শ্রমিকদের মজুরির অর্ধেক ভর্তুকি দেয়া; তা ছাড়া কৃষি শ্রমিকদের ১০ টাকা ভর্তুকি দরে চাল বিতরণের কার্যক্রমের আওতায় আনা। এমন সঙ্কটময় অবস্থায় পোশাক খাতও অন্যান্য শিল্প শ্রমিকরা, যারা বাড়িতে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে তাদের কৃষিকাজের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য উৎসাহ ও প্রেরণা দেয়া দরকার। তা ছাড়া কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদেরও উৎসাহ ও প্রেরণা দেয়া যায়। দেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এটিকে অনুশীলন বা জাতির প্রতি বিশেষ কর্তব্য হিসেবে গণ্য করতে হবে। দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য অন্যদের যেভাবে সম্মাননা দেয়া হয়, তাদেরও সেভাবে সম্মানিত করা যায়।
কৃষি ঋণ, দায়-দেনা ও সুদের হার: আসন্ন মৌসুমে অধিক খাদ্য উৎপাদনকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে অবিলম্বে কৃষকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার করে নেয়া উচিত। সেই সাথে অপরিশোধিত ঋণের ওপর বকেয়া সুদ মওকুফ করা উচিত। বকেয়া ঋণ থাকলে সেই ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ন্যূনতম দুই বছর বাড়ানো উচিত। একই সাথে নতুন ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। নতুন ঋণের ওপর সুদের হার হবে প্রথম বছরের জন্য শূন্য (০) শতাংশ। তার পর আগামী দুই বছর ৪ শতাংশ এবং তার পর সুদের হার স্বাভাবিক কৃষি ঋণের হারে হতে হবে। তবে কোনোক্রমেই কৃষি ঋণের ওপর সুদের হার ৫ শতাংশের বেশি হওয়া উচিত নয়।
২০২০ সালের এপ্রিল থেকে সরকারের নির্দেশে সব বাণিজ্যিক ঋণের ওপর সুদের হার ১২-১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। কৃষি ঋণের ওপর সুদের হার ছিল ৯ শতাংশ। অতএব বাণিজ্যিক ঋণের ওপর সুদের হার কমানোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে কৃষি খাতে বার্ষিক সুদের হার সর্বোচ্চ ৪ অথবা ৫ শতাংশ ধার্য করা উচিত। কৃষি ঋণ বলতে কৃষি উপকরণ উৎপাদনকারী, আমদানিকারক, সরবরাহকারী ও কৃষি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ‘বাংলাদেশ বীজ সমিতি’ এরই মধ্যে সরকার কর্তৃক ঘোষিত সহায়তা ও উদ্দীপনা প্যাকেজে বীজখাতকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে।
সহায়তা বিতরণে ব্যবস্থাপনা: সরকারি প্রণোদনা, উদ্দীপনা, ভর্তুকি বা সহায়তা, যে নামেই অভিহিত করা হোক, তা অবশ্যই ভূমিহীন বর্গাদারসহ সব কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে হবে; কেবল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা বড় চাষিদের কাছে নয়। দৈনিক বণিক বার্তার (২২ এপ্রিল, ২০২০) প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট চাষি পরিবারের সংখ্যা প্রায় তিন কোটি ৫৫ লাখ। এর মধ্যে ৬৫ লাখ বর্গাদার। ২৩ লাখ চাষির নিজস্ব কোনো জমি নেই। তারা বছরভিত্তিক অন্যের জমি ইজারা নিয়ে বিভিন্ন মৌসুমে বিভিন্ন ফসল আবাদ করে। বর্গাদার ও ভূমিহীন কৃষকের সংখ্যা ৮৮ লাখ, অর্থাৎ মোট কৃষক পরিবারের ৩০ শতাংশ। কৃষি পণ্য উৎপাদনে তারা বড় ভূমিকা পালন করে। তাই যেকোনো ধরনের সাহায্য, সহায়তা, প্রণোদনা বা ভর্তুকি; যাই হোক না কেন, তাদের কাছে পৌঁছানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
উপসংহার: জলবায়ুর পরিবর্তন ও এই করোনা মহামারী বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে কোনো না কোনোভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এর প্রভাবে অনেক দেশে খাদ্য উৎপাদন কমে যাচ্ছে। খাদ্যপণ্যের আন্তর্জাতিক সরবরাহ চেইন ভেঙে পড়তে পারে। আসন্ন বছরগুলোতে বহু দেশে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। অতএব স্থানীয়ভাবে সব ধরনের খাদ্যপণ্য উৎপাদন বৃদ্ধি আবশ্যক। স্থানীয়ভাবে উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে ভূমিওয়ালা ও ভূমিহীন কৃষক ছাড়াও সব কাঁচামাল উৎপাদক, উপকরণ ও উপাদান সরবরাহকারী, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান এবং যেসব গোষ্ঠী কৃষিকাজের সাথে সম্পৃক্ত তাদের সহায়তা দিতে হবে। এখানে উল্লেখ্য, গত বছরগুলোতে হাঁকডাক হলো কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ ও যন্ত্রপাতিতে বড় অঙ্কের ভর্তুকি দেয়া। এখানে মনে রাখা আবশ্যক, কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ মানেই হলো কৃষি খাত থেকে শ্রমিকদের কর্মচ্যুতি। এ সঙ্কটকালে যন্ত্র সরবরাহকারীদের এ ধরনের বিশাল অঙ্কের ভর্তুকি দেয়ার অর্থ হলো; প্রান্তিক চাষি ও দিনমজুরদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বনের ওপর হামলা করা। কৃষির প্রধান খাতগুলোতে যেমন; শস্য-ফসল, (ধান-গম-ভুট্টা প্রভৃতি) শাকসবজি, ফুল, ফল, পশুসম্পদ (গোশত ও দুগ্ধ ও দুগ্ধপণ্য), পোলট্রি (গোশত ও ডিম) ও মৎস্য অন্তর্ভুক্ত। কৃষি উৎপাদনশীলতা ও উৎপাদন বাড়াতে যেসব উপখাত জড়িত, ওই সব খাতের সবাইকে সরকার কর্তৃক ঘোষিত ভর্তুকি এবং উদ্দীপনা প্যাকেজের আওতায় আনা বাঞ্ছনীয়। এসব গোষ্ঠীর লক্ষ্য এক, দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি বা উৎপাদনে সহায়তা করা। এটি নিশ্চিত যে, ত্বরিত গতিতে হোক বা কিছুটা বিলম্বে হোক, বিশ্ব কোভিড-১৯ মহামারীর ধাক্কা কাটিয়ে উঠবে। কিন্তু যত দিন পর্যন্ত প্রতিরোধক বা নিরাময়ের ওষুধের অভাব থাকবে, তত দিন এই রোগের প্রতিরোধকল্পে, প্রতিটি দেশ চলাচলে বিধিনিষেধসহ যেসব উপায় অবলম্বন করবে, তাতে অর্থনীতির ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তদুপরি খাদ্য উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তাতে ভবিষ্যতে মহামারী নিয়ন্ত্রণে এলেও অদূরভবিষ্যতে খাদ্য সমস্যা থেকে যাবে। অতএব সবার জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন সব ঝুঁকিগ্রাহকের সাথে সমন্বয় করে জরুরিভিত্তিতে বহুমুখী নীতি গ্রহণ করা এবং ত্বরিতগতিতে সেসবের বাস্তবায়ন করা; যাতে প্রয়োজনমাফিক দেশে যথাসময়ে যথাযথভাবে পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন করা যায়। খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে বীজ শিল্প মৌলিক ও মূল ভূমিকা পালন করে। কোভিড-১৯ এর প্রভাবে বিভিন্ন বিধিনিষেধের কারণে বীজ শিল্পের কার্যক্রম বর্তমানে ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হলেও বীজ শিল্পের সাথে জড়িত প্রতিটি ব্যক্তি দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রান্তিক কৃষকদের চাহিদামতো বীজ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান ও উপকরণের সরবরাহ চলমান রেখেছে। আমার দৃঢ়বিশ্বাস- সঙ্কট যতই দীর্ঘায়িত হোক, সব ঝুঁকি গ্রাহকের সমন্বিত প্রচেষ্টায় দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
লেখক : কৃষি অর্থনীতিবিদ, সাবেক সভাপতি, এফবিসিসিআই সভাপতি, বাংলাদেশ সিড অ্যাসোসিয়েশন




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com