সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০০ অপরাহ্ন

অনিন্দ্য সুন্দর ইস্তিকলাল মসজিদ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৩ আগস্ট, ২০২১

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার বিখ্যাত মার্ডিকা স্কয়ার। সেখানে অবস্থিত নান্দনিক ও অনিন্দ্য সুন্দর ইস্তিকলাল মসজিদ। এটি দেশটির জাতীয় মসজিদ ও স্থাপনা। এছাড়াও ধারণ ক্ষমতার বিচারে দক্ষিণ পূর্ব-এশিয়ার বৃহত্তম ও বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম মসজিদ। ‘ইস্তিকলাল’ হলো আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো- স্বাধীনতা। ১৯৪৯ সালে নেদারল্যান্ড থেকে স্বাধীনতা লাভ করে ইন্দোনেশিয়া। জনসংখ্যার বিচারে বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম হওয়ায় স্বাধীনতা লাভ করার পরপরই সেখানে ‘ইস্তিকলাল’ নামে জাতীয় মসজিদ নির্মাণের আওয়াজ তুলে ধর্মপ্রাণ জনগণ। গণদাবীর প্রেক্ষিতে এই মসজিদ নির্মিত হয়। আর নাম রাখা হয় ‘মসজিদুল ইস্তিকলাল’ তথা স্বাধীনতা স্মারক মসজিদ।
ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি আহমদ সুকর্ণ ১৯৫৪ সালে মসজিদের নকশা তৈরির দায়িত্ব দেনÍ তৎকালীন ইন্দোনেশিয়ার বিশ্ববিখ্যাত স্থপতি উত্তর সুমাত্রার খ্রিস্টান নাগরিক ফ্রেডরিক সিলাপানকে। ডিজাইন অনুমোদনের পর নির্মাণকাজ আরম্ভ হয়ে প্রায় ১৭ বছর চলে। ১৯৭৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট সূকার্ণ মসজিদটি উদ্বোধন করে।
আধুনিক স্থপত্যশিল্পে অনন্য উপহার নয়নাভিরাম এই মসজিদটি গোলাকার। আয়তন ২৭৫০ বর্গমিটার। এই মসজিদে একসাথে প্রায় দুই লক্ষ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারে। এজন্য এটিকে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ মসজিদ বলা হয়। মসজিদের উপর দুইটি বিশাল গম্বুজ রয়েছে, ৯০ মিটার দৈর্ঘ্য একটি মিনার রয়েছে। আর ছাদের বাহিরের দিক বিভিন্ন ধরনের ও রঙের দৃষ্টিনন্দন ইসলামি কারুকার্য সজ্জিত। আর কিবলার দিকে অংশে একদিকে আরবি ক্যালিগ্রাফিতে স্থাপন করা হয়েছে আল্লাহ জাল্লা জালালুহু অপর দিকে স্থাপন করা হয়েছে মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।
বহুতল এই স্থাপনার অন্যতম সৌন্দর্য হলো বাহিরের বিশাল উন্মুক্ত মাঠ। খোলা মাঠের চারপাশে কৃত্রিম হ্রদ রয়েছে। হ্রদে আকর্ষণীয় ঝাড়বাতি স্থাপন করা হয়। লেকের পাড়ে রয়েছে মসজিদ শপিংমল। মসজিদ ও মসজিদ বাহিরের অপরূপ সৌন্দর্যে মতোয়ারা হয়ে যায় আগত মুসল্লিরা। অনেকে ছুটি কাটানোর জন্য চলে আসে এখানে। অমুসলিম দর্শনার্থীরা পর্যন্ত ছবি তুলতে এখানে জড়ো হয়।
রাজধানী জাকার্তসহ অন্যান্য এলাকার হাজার হাজার ইন্দোনেশিয়ান নাগরিক প্রতিদিন এ মসজিদ সমবেত হয়। আয়তন ও ধারণ ক্ষমতা হিসেবে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদকে একটি ধর্মীয় ও জাতীয় নিদর্শন হিসেবে গণ্য করে সকল ইন্দোশিয়ান নাগরিক। তাই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই সমবেত হয় এখানে। ধর্মীয় ও জাতীয় ঐতিহ্যের পাশাপাশি ভৌগলিক অবস্থানের কারণে ইন্দোনেশিয়ায় আগত যেকোনো পর্যটকের কাঙ্ক্ষিত স্থান এই মসজিদ। এটি অবস্থিত মারডেকা তথা স্বাধীনতা স্কয়ারের পাশে, এর বিপরীতে তামান বিজয়া কুসুমা স্ট্রিটে রয়েছে ক্যাথলিক চার্চ। যা ইন্দোনেশিয়ার ধর্মীয় স¤প্রীতির ইঙ্গিত বহন করে। রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় বিভিন্ন উপলক্ষে এই মসজিদে আয়োজন করা হয়Í ইসলামিক লেকচার, কর্মশালা ও সেমিনার। স্কুল অফ পিরিয়ড়ে মসজিদে ছেলেমেয়েদের পৃথকভাবে ইসলামি শিক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা রয়েছে। নারীদেরও ইসলামি শিক্ষা অর্জনের আলাদা কোর্স রয়েছে। এই মসজিদের অন্যতম দাওয়াতি কার্যক্রম হলো- (১) অমুসলিমদের জন্য সাপ্তাহিক ঘন্টাব্যাপী ইসলাম পরিচিতি অনুষ্ঠান ও প্রশ্নোত্তর পর্ব। (২) সকল বয়সী মুসলিমদের জন্য পৃথক পৃথক আরবি ভাষা শিক্ষা কোর্স। লেখক : মুহাম্মদ ইলিয়াছ আরমান, মুহাদ্দিস, ইসলামিয়া মহিলা কামিল মাদরাসা, কক্সবাজার।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com