তরুণ সমাজকে মার্কবাদী দর্শন সম্পর্কে জানানো ও তাদের মনে দেশপ্রেম দৃঢ় করতে চীনের পাঠ্যপুস্তকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের রচনাবলী অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা সিনহুয়া নিউজের বরাত দিয়ে করা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়য়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, তরুণ প্রজন্মের মনে দেশপ্রেম দৃঢ় করতে এবং চায়না কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) প্রতি আনুগত্য বাড়াতে দেশের প্রাথমিক শিক্ষাস্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের রচনাবলী ‘নতুন জামানায় চীনা বৈশিষ্টের সমাজতন্ত্র ও এ সম্পর্কিত ভাবনা’- এর বিভিন্ন প্রবন্ধ অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সিসিপির প্রধান নেতা শি জিনপিং চীনের প্রেসিডেন্টের পদে আসীন হন ২০১২ সালে। তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে দেশের সামাজিক, বাণিজ্যিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক অঙ্গণে সিসিপির উপস্থিতি ও নিয়ন্ত্রণ আরও ?দৃঢ়তর হচ্ছে। ২০১৮ সালে চীনের সংবিধানে শিনপিংয়ের ‘নতুন জামানায় চীনা ধরনের বৈশিষ্টের সমাজতন্ত্র ও এ সম্পর্কিত ভাবনা’ রচনাবলী অন্তর্ভুক্ত হয়। পাশাপাশি, সিসিপির কর্মীদের জন্য সমাজতন্ত্রের প্রবক্তা কার্ল মার্ক্স, লেনিন, মাও-এর রচনাবলী পড়ার পাশাপাশি জিনপিংয়ের প্রবন্ধ অধ্যয়নও বাধ্যতামূলক করা হয়। একশ বছর আগে ১৯২১ সালের ১ জুলাই চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দীর্ঘ এক গৃহযুদ্ধের পর ১৯৪৯ সালে তারা চীনের ক্ষমতায় আসে। তারপর থেকে ৭২ বছর ধরে দলটি চীন শাসন করে আসছে। প্রথমে কৃষক ও শ্রমিকদের নিয়ে গঠিত হলেও পরবর্তীতে চীনের ক্ষমতাসীন এ দলটি ‘চীনা ধরনের সমাজতন্ত্র’ শ্লোগানের আলোকে বাজার অর্থনীতি ও তার উদ্যোক্তা সংস্কৃতিকে বরণ করে নেয়, কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের প্রবর্তিত পার্টির কর্তৃত্ববাদী শাসনের মডেল ধরে রাখে। ২০২০ সালে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টিতে ২৪ লাখ ৩০ হাজার নতুন সদস্য যুক্ত হন। ২০১৩ সালে শি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে এ বছরই সবচেয়ে বেশি লোক দলটিতে যোগ দিয়েছেন। এখন দলটির সদস্য সংখ্যা নয় কোটি ৫১ লাখ ৫০ হাজার বলে বুধবার প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে। চলতি বছর ১ জুলাই পার্টির শততম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেছে সিসিপি। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে শি জিনপিং বলেছিলেন, ‘চীন এক নতুন বিশ্বের পথে হাঁটছে। চীনের জনগণ কেবল পুরনো পৃথিবী ভাঙতেই দক্ষ নয়, বরং তারা একটি নতুন পৃথিবী গড়ে তুলতেও সক্ষম। একমাত্র সমাজতন্ত্রের মাধ্যমেই এটি সম্ভব এবং একমাত্র সমাজতন্ত্রই চীনকে বাঁচাতে পারে।’