আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নজরুলের অসাম্প্রদায়িক চেতনা চিরদিন বাঙালির অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ কথা বলেছেন সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবৃক্ষ এখনো ডালপালা বিস্তার করে যাচ্ছে, সেই বিষবৃক্ষকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমূলে উৎপাটিত করতে হবে।কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন কবি পরিবারের সদস্যরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এ সময় কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শেষে তার নাতনি খিলখিল কাজী বলেছেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ‘বাঙালির আত্মপ্রকাশে দুর্দান্ত প্রেরণা’ ছিলেন। তার লেখনি সবসময় অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে কাজ করেছে। এত বড় অসাম্প্রদায়িক কবি মনে হয় পৃথিবীতে আর আসেনি। তিনি সবসময় মানুষের জয়গান গেয়েছেন।
খিলখিল কাজী বলেন, ‘কবি নজরুলের রচনাবলি জাতীয় সম্পদ। কিন্তু সেগুলো আজও ইংরেজিসহ অন্যান্য ভাষায় অনুদিত হয়নি। শুধু কবরে এসে ফুল দিলেই তার প্রতি গোটা শ্রদ্ধা জানানো হয় না। তার যে কাজগুলো রয়েছে, সেগুলো সকলের দায়িত্বে সারাবিশ্বের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার একটা ব্যাপার আছে। এটি রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব এবং এই কাজটি অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে।’ নজরুলের গ্রন্থগুলো ইংরেজিসহ সারা পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ ভাষায় অনুবাদ করে তাদের পৌঁছে দেয়া উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদ্রোহী সত্তা যে উৎপীড়িত, নিপীড়িত, লাঞ্ছিত মানুষের কথা বলেছে, আজকে পৃথিবীতে যে হানাহানি, জাতিগত বিভেদ চলছে… এই সময়ে কবির লেখাগুলোকে যদি অনুবাদ করে সারা পৃথিবীতে পৌঁছে দিতে পারি তাহলে সেটিই হবে আজকের জন্য বড় কাজ। কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামানও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীকে এম খালিদ বলেন, কবির প্রতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গভীর শ্রদ্ধাবোধ ছিল। সেই শ্রদ্ধাবোধের জায়গা থেকে কবিকে ভারত থেকে নিয়ে এসে ‘জাতীয় কবি’ উপাধিতে ভূষিত করেন। কবি নজরুল এখনো প্রাসঙ্গিক আছেন এবং ভবিষ্যতেও প্রাসঙ্গিক থাকবেন। তার বিদ্রোহী কবিতা স্বাধীনতা যুদ্ধেও যেমন মানুষকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে, তেমনি স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামেও সাহস ও উৎসাহ যুগিয়েছে।’