শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের ৩৮৭তম সভা অনুষ্ঠিত অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে দ্রুত জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে -আমান শ্রীমঙ্গলে নারী চা শ্রমিক-কর্মজীবী নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য নিয়ে সংলাপ কালীগঞ্জে সরকারি মাহতাব উদ্দিন কলেজে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম : আতঙ্কে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বগুড়ার শেরপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত-নিহতদের স্মরণসভা দেশবিরোধী চক্রান্তকারীদের দাঁত ভাঙা জবাব দেওয়া হবে-রেজাউল করিম বাদশা দুর্গাপুরে আইনজীবীদের মানববন্ধন কয়রায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণ সভা ও সাংস্কৃতিক ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মুন্সীগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধের প্রতিবাদে জলঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ দুর্গাপুরে শেষ হলো দুইদিন ব্যাপি কৃষিবিষয়ক প্রশিক্ষণ

স্কুলশিক্ষার্থীদের আগে বাবা-মায়ের করোনার টিকা নিশ্চিত করা জরুরি

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১

একান্ত সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ডা: মেজবাহ্ উদ্দিন আহমেদ 

স্কুল খোলার আগে শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া জরুরি নয়। বরং এর আগে তাদের বাবা-মায়ের করোনার টিকা নিশ্চিত করা বেশি দরকার। অভিভাবকদের টিকা দেয়া সম্পন্ন হলে স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকা না দিয়েও স্কুল কলেজ খুলে দেয়া যাবে। কেননা ১৮ বছরের কম বয়সের শিশুদের শরীরে প্রকৃতিগতভাবেই ইমিউনিটি শক্তি বেশি থাকে। তাই সরকারের পক্ষ থেকে শিশুদের টিকা দেয়ার বিষয়ে ইতিবাচক চিন্তা থাকার পাশাপাশি সবার আগে জরুরি হলো অভিভাবক, শিক্ষক এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকার আওতায় নিয়ে আসা। একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন বাংলাদেশ শিশুচিকিৎসক সমিতির সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা: মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ। তার সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ কেেরছন সিনিয়র সাংবাদিক শাহেদ মতিউর রহমান । দৈনিক নয়া দিগন্তের সৌজন্যে দৈনিক কবরপত্রের পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো।
প্রশ্ন: স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার বিষয়ে সরকার ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন ?
অধ্যাপক ড. মেজবাহ্ উদ্দিন আহমেদ : হ্যাঁ, এটাতো ভালো উদ্যোগ নিঃসন্দেহে। তবে আমাদের উচিত স্কুলশিক্ষার্থীদের আগে অভিভাবকদের টিকা নিশ্চিত করা । স্কুল খোলার আগে সব শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া জরুরিও নয়। বরং সরকারের উচিত হবে সবার আগে অভিভাবকদের টিকা পাওয়া নিশ্চিত করা।
প্রশ্ন: শিক্ষার্থীদের টিকা না দিয়ে স্কুল খুলে দেয়া হলে কি শিশুরা বেশি ঝুঁকিতে থাকবে?
অধ্যাপক ড. মেজবাহ্ উদ্দিন আহমেদ : না, বিষয়টি এমন নয়। শিক্ষার্থীদের টিকা না দিয়েও স্কুল কলেজ খুলে দেয়া যাবে। তবে সেখানে প্রধান দুটি শর্ত হচ্ছে, সব স্কুল কলেজে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের টিকার আওতায় আনতে হবে। এই শর্ত দু’টি পুরোপুরি মানতে পারলে স্কুল কলেজ খুলতে শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া তেমন জরুরি নয়।প্রশ্ন : তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন, টিকা ছাড়াই শিশুরা করোনার ঝুঁকিমুক্ত?
অধ্যাপক ড. মেজবাহ্ উদ্দিন আহমেদ : শিশুদের করোনার ঝুঁকি কম। তাই স্কুল খুলতে শিশুদের টিকা একান্ত জরুরি নয়। তবে শিশুরা যেখানে ২৪ ঘণ্টাই পরিবারের সাথে থাকে অর্থাৎ তাদের বাসা বাড়িতে তাদের বাবা-মায়ের জন্য টিকা নেয়াটা বেশি জরুরি।
প্রশ্ন: শিশুদের অভিভাবক বলতে শুধু কি তাদের বাবা-মাকে বোঝাতে চাইছেন?
অধ্যাপক ড. মেজবাহ্ উদ্দিন আহমেদ : না। শিশুদের বাবা মা ও তাদের বাসার সব বয়স্ক লোকদের টিকা দেয়া আগে জরুরি। সরকারই বলছে আগে বয়স্কদের টিকা দেয়া হবে। একই সাথে যারা শিক্ষার্থীদের সংস্পর্শে বেশি থাকবেন তাদেরও আগে টিকা দিতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষক, প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকেও টিকার আওতায় আনতে হবে।
প্রশ্ন: সরকারের হিসাবে তো এখন পর্যন্ত শিক্ষকদের ৯০ ভাগ টিকার আওতায় চলে এসেছেন।
অধ্যাপক ড. মেজবাহ্ উদ্দিন আহমেদ : এই হিসাবটা শুধু শিক্ষকদের একক মাত্রায় নিলে হবে না। দেখুন সরকারের হিসাবেই তো এখন পর্যন্ত মাত্র ৪ শতাংশ লোকের টিকার দুই ডোজ দেয়া সম্ভব হয়েছে। তাহলে বাকি ৯৬ ভাগ এখনো কিন্তু টিকার আওতার বাইরেই রয়ে গেছে। এটাই আমাদের জন্য অ্যালার্মিং পয়েন্ট।
প্রশ্ন: আমেরিকাতে তো দেখলাম তারা শিশুদেরও টিকার আওতায় নিয়ে আসার একটি উদ্যোগ নিয়েছে। বিশ্ব মিডিয়াতেও বিষয়টি নিয়ে বেশ ফলাও করে প্রচার হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারও হয়তো তেমনি একটি চিন্তা থেকেই স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার কথা ভাবছে।
অধ্যাপক ড. মেজবাহ্ উদ্দিন আহমেদ : দেখুন, অন্যরা কী করছে বা তারা কী ভাবছে সেটা নিয়ে বাংলাদেশে তার বাস্তবায়ন নিয়ে চিন্তা করলে তো হবে না। আমাদের চিন্তা করতে আমাদের বাস্তবতা আর সক্ষমতা নিয়ে। আর্থসামাজিক অবস্থাও চিন্তা করতে হবে। আমাদের আগে জরুরি রিস্ক গ্রুপকে সেইফ করা। টিকার মজুদ নিশ্চিত করে তারপর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়ার টার্গেট নির্ধারণ করা।
প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের তো টিকার আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। তারাতো ক্লাসে ফিরতে পারবে।
অধ্যাপক ড. মেজবাহ্ উদ্দিন আহমেদ : হ্যাঁ, তাদের দেয়া হোক। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বয়স অনেক ক্ষেত্রেই ২৫ বছরের বেশি। আমরা নিজেরাও মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় নিয়ে আসছি। এটা অবশ্য সরকারেরও সিদ্ধান্ত।
প্রশ্ন:: তাহলে আপনি বলতে চাইছেন, স্কুল পর্যায়ের শিশুদের টিকা এখন না দেয়া হোক?
অধ্যাপক ড. মেজবাহ্ উদ্দিন আহমেদ : টিকা স্কুলের শিশুরা পাবে। আমরাও এটা চাই। তবে আগে সিনিয়র সিটিজেনদের টিকা নিশ্চিত করা হোক। তারপর অন্যদের। কেননা শিশুরা তুলনামূলক কম ঝুঁকিতে থাকে। তাদের শরীরে ইমিউনিটি শক্তি বেশি। তাই আমি বলছি আগে বয়স্কদের টিকা দেয়া হলে এটা যখন ৬০ বা ৭০ ভাগ কাভারেজের মধ্যে চলে আসবে তখন স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া যেতে পারে।
প্রশ্ন: স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকা না দিয়েও কি তাহলে স্কুল খুলে দেয়া যাবে?
অধ্যাপক ড. মেজবাহ্ উদ্দিন আহমেদ : হ্যাঁ, স্কুল খুলে দেয়া যেতে পারে। শিক্ষার্থীদের বাবা-মা যদি টিকা নিয়ে থাকেন তাহলে স্কুল খুলে দিলেও কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
প্রশ্নকর্তা: আপনাকে ধন্যবাদ।
অধ্যাপক ড. মেজবাহ্ উদ্দিন আহমেদ : আপনাকে এবং নয়া দিগন্তকেও অনেক ধন্যবাদ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com