গ্রাহকের টাকা আত্মসাতে অভিযুক্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের কথিত পৃষ্ঠপোষক বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানাকে দেশে ফিরেয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা: শফিকুল ইসলাম। গতকাল রোববার দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে নিজ কার্যালয়ে ডিএমপি কমিশনার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, যেহেতু ভারতে মামলা হয়েছে এ কারণে তাকে ফিরিয়ে আনা যাবে কি-না সেটি নিশ্চিত না। তবে ফিরিয়ে আনার রাস্তা রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিএসএফকে চিঠি দিয়ে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এটি অনেক সময় করা হয়। আমরা চেষ্টা করছি ফিরিয়ে আনার জন্য। তিনি আরো বলেন, তার ব্যাপারে গুলশান বিভাগ পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে রিপোর্ট পেলে শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর আগে শুক্রবার বিএসএফের সদস্যরা পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত থেকে তাকে আটক করেন। গত শনিবার শিলিগুড়ি থেকে প্রকাশিত পত্রিকা উত্তরবঙ্গ সংবাদ তাদের অনলাইন ভার্সনে এক খবর দেয়। ওই পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত থেকে সোহেল রানা নামে এক বাংলাদেশীকে আটক করেছে বিএসএফ। তার কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বিদেশী পাসপোর্ট, একাধিক মোবাইল ও এটিএম কার্ড। শনিবার তাকে মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সোহেল রানার নামে বাংলাদেশে অপরাধমূলক একাধিক কাজের অভিযোগ রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টি জানতে পেরেছে বিএসএফ। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, গা-ঢাকা দেয়ার জন্য ভারতে প্রবেশ করেছেন সোহেল রানা। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিএসএফ কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।
আটক ব্যক্তির পরিচয় হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের বাসিন্দা শেখ সোহেল রানা। তিনি ঢাকায় বাংলাদেশ মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত। এদিন বনানী থানা সূত্রে জানা যায়, গ্রাহকের ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে ই-অরেঞ্জ প্রতিষ্ঠানটি। বনানী থানার পুলিশ পরিদর্শক শেখ সোহেল রানার বোন ও ভগ্নিপতি চালাতেন প্রতিষ্ঠানটি। এই অভিযোগে সোহেল রানার বোন, ভগ্নিপতিসহ পাঁচজনকে প্রতিষ্ঠানটির মালিক উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় প্রতারণার মামলা করেছেন এক ভুক্তভোগী। পুলিশ বলেছে, ই-অরেঞ্জের মূল মালিক পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানার বোন সোনিয়া মেহজাবিন, ভগ্নিপতি মাসুকুর রহমান ও আমানউল্লাহ নামের এক ব্যক্তি। মামলার পর এই তিনজনই এখন কারাগারে আছেন। এজাহারভুক্ত আসামি বীথি আক্তারসহ দুজন পলাতক। এক লাখ গ্রাহকের ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার গুলশান থানায় প্রতারণার মামলা করা হয়। মামলায় ভুক্তভোগী ২৯ জন গ্রাহকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের মধ্য থেকে তাহেরুল ইসলাম বাদি হয়েছেন। ই-অরেঞ্জ প্রতিষ্ঠানটি মোটরসাইকেল, মুঠোফোনসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী অনলাইনে বিক্রি করত।