ভিটামিন ডি শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। করোনাকালে দু’টি ভিটামিন গ্রহণের উপর চিকিৎসকরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন, আর তা হলো ভিটামিন সি ও ডি।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে ভিটামিন সি। অন্যদিকে শরীরের কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে প্রয়োজন ভিটামিন ডি’র। এই ভিটামিন শরীরের হাড় মজবুত করে। এমনকি বেশ কিছু ক্যানসারও প্রতিরোধ করে। যারা অতিরিক্ত ওজনে কিংবা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের মধ্যেই এই ভিটামিনের ঘাটতি দেখা যায়। তবে শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি আছে কি না তা পরীক্ষা করার উপায় কী? রক্ত পরীক্ষা না করিয়েও শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি আছে কি না তা জানা যায় জিহ্বা দেখেই। জেনে নিন ভিটামিন ডি কমলে শরীরে যেসব লক্ষণ প্রকাশ পায়- ২০১৭ সালে মায়ো ক্লিনিকের ডিপার্টমেন্ট অব ডার্মাটোলজির এক সমীক্ষা অনুযায়ী, কারও শরীরে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি থাকলে তারা ‘বার্নিং টাং বা বার্নিং মাউথ সিনড্রোমে’ ভুগতে পারেন। এই সিন্ড্রোম প্রকাশ পেলে ফাস্টিং ব্লাড গ্লুকোজ, ভিটামিন ডি ৯ (ডি২ এবং ডি৩), ভিটামিন বি৬, জিঙ্ক, ভিটামিন বি১ ও টিএসএইচ পরীক্ষা করে দেখা উচিত।
বার্নিং টাং বা বার্নিং মাউথ সিনড্রোমের লক্ষণ কী? এই সিন্ড্রোমে ঠোঁট বা জিহ্বা অথবা মুখের নানান স্থানে পুড়ে যাওয়ার মতো ব্যথা বা জ্বালাভাব থাকে। এছাড়াও অনেকের মধ্যে অন্যান্য লক্ষণও দেখা যায় যেমন- মুখে অসাড়তা, শুষ্কতা ও অপ্রীতিকর স্বাদ। এসব কারণে খাবার খাওয়ার ইচ্ছাও কমতে শুরু করে।
তবে এই বার্নিং টাং সিন্ড্রোম যে শুধু ভিটামিন ডি’র অভাবেই হয়ে থাকে তা কিন্তু নয়। বরং একাধিক ভিটামিন ও মিনারেলের অভাবও এর জন্য দায়ী। ভিটামিন বি, আয়রন ও জিঙ্কের অভাবেও এই সমস্যাটি হয়। এমন লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চিকিৎসকরা রোগীর টিউবারকিউলোসিস, কিডনি ও লিভার ইত্যাদি পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। আর অতিরিক্ত ওজন যাদের সেসব ব্যক্তিদেরকে স্বাস্থ্যকর বিএমআই বজায় রাখার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
ভিটামিন ডি’র ঘাটতি প্রতিরোধে: এক সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, বার্নিং মাউথ সিন্ড্রোম আছে এমন ব্যক্তিদের ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট দেওয়া হলে দু’সপ্তাহের মধ্যেই তাদের অবস্থায় উন্নতি ঘটে। অনেকেই ভাবেন ভিটামিন ডি শুধু হাড়ের জন্য উপকারী। এ ধারণা ভুল। কারণ শরীরের প্রায় সব অংশই এই ভিটামিন গ্রহণ করে। আবার শীত ও শরৎকালে যখন সূর্যরশ্মির গায়ে লাগানোর সম্ভাবনা কম থাকে, তখন চিকিৎসকরা ওরাল ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্টের পরামর্শ দেন।
শরীরে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি পূরণে নিয়মিত সূযরশ্মির সংস্পর্শে আসুন, তবে অতিরিক্ত নয়। সপ্তাহে ২-৩ বার মুখ, হাত ও পিঠে ১০-১৫ মিনিটের জন্য সূর্যরশ্মি লাগান। এই সময়ের মধ্যেই শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি শোষণ করতে পারবে। পাশাপাশি ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার গ্রহণ করুন।
দৈনিক কতটুকু ভিটামিন ডি গ্রহণ করা উচিত? >> এক বছরের ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ৪০০ আইইউ (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট)। >> ৭০ বছর পর্যন্ত বাচ্চা, কিশোর ও প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে ৬০০ আইইউ।
>> ৭১ বছরের উর্ধ্বে ৮০০ আইইউ। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া