ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পানি ছাড়া নিয়ে দেশটির জলাধার কর্তৃপক্ষের কঠোর সমালোচনা করেছেন। শুক্রবার এক টিভি চ্যানেলকে টেলিফোনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘না জানিয়ে ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া পাপ। এটা অপরাধ।’ পশ্চিমবঙ্গে টানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ার পাশাপাশি বেড়েছে নদীগুলোর পানির স্তর। এর মধ্যেই মাইথন, পাঞ্চেত, ডিভিসির মতো জলাধার থেকে পানি ছাড়ায় নদীগুলো ফুলে ফেঁপে উঠেছে। এতে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কলকাতা থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, বেশ কয়েকটি গ্রাম ইতোমধ্যেই প্লাবিতও হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আবার সরব হলেন মমতা। আরও একবার তিনি এ বন্যাকে ‘ম্যান মেড’ বলে অভিহিত করেন।
রাজ্যকে না জানিয়ে পানি ছাড়ার বিষয়টি নিয়ে হতাশ মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, ‘কত বার বলেছি, না বলে জল ছাড়বেন না। বলতে বলতে হতাশ হয়ে যাচ্ছি। না জানিয়ে রাত ৩টার সময় যদি জল ছেড়ে দেয়, তা হলে তো মানুষ ঘুমন্ত অবস্থাতেই ভেসে যাবে। এটা পাপ। এটা অপরাধ।’ তিনি বলেন, ‘আগে থেকে জানলে তো আমরা মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যেতে পারি।’ এর পরই তিনি বলেন, ‘জল ছেড়ে কেন বন্যা ঘটাবে? ঝাড়খ-ের বোঝা আমরা কেন নেব?’ বানভাসি এলাকার মানুষদের কাছে প্রশাসনের সব রকম সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাসও দেন তিনি।
জানা যায়, শুক্রবার সকালে মাইথন জলাধার থেকে ৮০ হাজার কিউসেক এবং পাঞ্চেত থেকে ৫৫ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে। অন্য দিকে, দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে দেড় লাখ কিউসেকেরও বেশি জল ছাড়া হয়েছে। এতেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে জেলা প্রশাসনের কপালে। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য জেলা প্রশাসনকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। গত জুলাই-আগস্টেই জলাধার থেকে পানি ছাড়ায় হুগলি, হাওড়া, পশ্চিম মেদিনীপুরসহ একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বেশ কয়েকটি নদীর বাঁধ ভেঙেও গিয়েছিল। এর জেরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছিল ওই এলাকার মানুষের।