গত এক সপ্তাহে রাজধানীর বাজারগুলোতে চাল, ময়দা ও তেলের দাম বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে মসুর ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, শুকনা মরিচ, হলুদ, মুরগিসহ বিভিন্ন মসলার দাম। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। রাজধানীর শাহজাহানপুর, মালিবাগ বাজার, কারওয়ান বাজার, বাদামতলী বাজার, সূত্রাপুর বাজার, শ্যামবাজার, কচুক্ষেত বাজার, মৌলভীবাজার, মহাখালী বাজার, উত্তরা আজমপুর বাজার, রহমতগঞ্জ বাজার, রামপুরা এবং মিরপুর-১ নম্বর বাজারের পণ্যের দামের তথ্য নিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে টিসিবি।
প্রতিষ্ঠানিটির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে সরু চালের (মিনিকেট, নাজির) দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ। ফলে এখন প্রতি কেজি মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬-৫৭ টাকা। সরু চালের পাশাপাশি মাঝারি মানের বা পাইজাম ও লতা চালের দামও বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ২ দশমিক ৯১ শতাংশ বেড়ে প্রতি কেজি পাইজাম ও লতা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৬ টাকায়। গত এক সপ্তাহে সব থেকে বেশি বেড়েছে খোলা ময়দার দাম। এক সপ্তাহে ১৬ শতাংশ বেড়ে প্রতি কেজি খোলা ময়দা এখন ৪২-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বাড়ার এ তালিকায় রয়েছে প্যাকেট ময়দাও। ১ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ বেড়ে প্যাকেট ময়দার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকায়। তবে কিছুটা কমেছে প্যাকেট আটার দাম। ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ কমে প্যাকেট আটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৪-৪০ টাকায়।
টিসিবি জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে লুজ ও বোতলের সব ধরনের সয়াবিন তেল এবং পাম অয়েলের দাম বেড়েছে। লুজ সয়াবিন তেলের দাম দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়ে লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৩৬ টাকার মধ্যে। বোতলের ৫ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়ে ৬৮০ থেকে ৭২০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। বোতলের এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। ফলে বোতলের এক লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫৫ টাকায়। লুজ পাম অয়েলের দাম ২ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়ে প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে। পাম সুপারের দাম গত এক সপ্তাহে বেড়েছে ৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। এতে প্রতি লিটার সুপার পাম এখন বিক্রি হচ্ছে ১২৮-১৩৫ টাকায়। তেলের পাশাপাশি গত এক সপ্তাহে মসুর ডাল এবং দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। মাঝারি দানার মসুর ডালের দাম ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেড়ে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯৮ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। দেশি পেঁয়াজের দাম ৯ দশমিক ২০ শতাংশ বেড়ে কেজি ৪৫-৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়ে কেজি ৪০ দশমিক ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছে টিসিবি।
টিসিবি জানিয়েছে, আমদানি করা রসুনের দাম গত এক সপ্তাহে বেড়েছে ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এতে প্রতি কেজি আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকায়। এর সঙ্গে বেড়েছে দেশি ও আমদানি করা শুকনা মরিচের দাম। এক সপ্তাহে দেশি শুকনা মরিচের দাম ৫ দশমিক ৭১ শতাংশ বেড়ে কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-২০০ টাকায়। আমদানি করা শুকনা মরিচের দাম ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেড়ে কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকায়। দাম বাড়ার এ তালিকায় রয়েছে দেশি হলুদ, আমদানি করা আদা, এলাচ, ধনে ও ব্রয়লার মুরগি। দেশি হলুদের দাম গত এক সপ্তাহে ২ দশমিক ২২ শতাংশ বেড়ে কেজি ২২০-২৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছে টিসিবি। আমদানি করা আদার দাম বেড়েছে ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। এই দাম বাড়ার মাধ্যমে এখন প্রতি কেজি আমদানি করা আদা বিক্রি হচ্ছে ৯০-১৪০ টাকায়।
ছোট এলাচের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এর মাধ্যমে প্রতি কেজি এলাচের দাম হয়েছে ২ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ৩০০ টাকা। ধনেগুঁড়ার দাম ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ বেড়ে কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির দাম ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়। অন্যদিকে গত এক সপ্তাহে দেশি আদা ও ডিমের দাম কমেছে। দেশি আদার দাম সপ্তাহের ব্যবধানে ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ কমে প্রতি কেজি ১৭০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। ডিমের দাম ৩ দশমিক ৯০ শতাংশ কমে হালি বিক্রি হচ্ছে ৩৬ থেকে ৩৮ টাকায়।