জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেছেন, সন্ত্রাসবাদ কোনো ধর্ম, জাতি, বিশ্বাস, সংস্কৃতি, নৃগোষ্ঠী বা সমাজের সাথে যুক্ত হতে পারে না এবং তা হওয়া উচিতও নয়।
তিনি বলেন, কোনো বিশেষ ধর্ম বা জাতীয়তার সাথে সন্ত্রাসবাদকে যুক্ত করার যে কোনো প্রচেষ্টাকেই বাংলাদেশ প্রত্যাখ্যান করে ও এর তীব্র নিন্দা জানায়। জাতিসংঘ সদরদপ্তরে নিউইয়র্ক সময় অনুযায়ি গতকাল ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ শীর্ষক’ এক উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন বলে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বুধবার জানানো হয়।
রাবাব ফাতিমার বক্তব্যে সন্ত্রাসবাদ ও এর যে কোনো রূপ বা ধরনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির পুনরাবৃত্তি করেন। সন্ত্রাসবাদ, সহিংস চরমপন্থা, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন ও এতদসংশ্লিষ্ট যে কোনো হুমকি প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার যে সব আইনী ও নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করেছে তা তুলে ধরেন তিনি।
এ ছাড়া বাংলাদেশ সরকার সহিংস উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের হুমকি মোকাবিলায় দেশের সক্ষমতাকে আরো সুদৃঢ় করতে জাতিসংঘ সংস্থাসমূহ, দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন ও সিভিল সোসাইটি সংস্থাসমূহের সাথে নিবিড় অংশীদারিত্ব বজায় রেখে কাজ করে যাচ্ছে বলে স্থায়ী প্রতিনিধি উল্লেখ করেন।
বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের ওপর কভিড-১৯ এর প্রভাবের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, মহামারিটি সন্ত্রাস প্রতিরোধ ও সন্ত্রাসবিরোধী জাতীয় ও বৈশ্বিক প্রচেষ্টাসমূহকে ব্যাহত করেছে। এক্ষেত্রে তিনি বৈশ্বিকভাবে অন্তর্ভূক্তিমূলক ও স্থিতিশীল পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টা গ্রহণের পাশাপাশি সক্ষমতা বিনির্মাণ, গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়, নারী ও যুবকদের ক্ষমতায়ন, অনলাইন প্লাটফর্মে সৃষ্ট ঘৃণ্য বক্তব্য, জাতিগত বিদ্বেষ ও উদ্দেশ্যমূলক তথ্য-বিভ্রান্তির বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণেরও আহ্বান জানান। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার ক্ষেত্রে শিক্ষা ও সমাজে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ বিনির্মাণ তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থার লিঙ্গগত দিকগুলো তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা নারীদের ওপর সন্ত্রাসের অসম প্রভাবের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি লিঙ্গসমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন এগিয়ে নেয়ার পাশাপাশি ‘নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা এজেন্ডা’র পূর্ণ ও কার্যকর বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
সন্ত্রাসবাদ ও এর যে কোনো রূপ বা ধরন মোকাবিলায় গৃহীত সকল প্রকার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় সুদৃঢ় ও নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে থাকার প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার রয়েছে বলে পুনরুল্লেখ করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।