রাজধানীর বনানী থানার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমনির জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। জামিনের মেয়াদ শেষ হওযার পর গতকাল রোববার (১০ অক্টোবর) ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদারের আদালতে পরীমনির আইনজীবী তার স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। এর আগে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে আদালতে যান পরীমনি। মাদকের মামলায় প্রতিবেদন দাখিল হওয়া পর্যন্ত তিনি জামিনে ছিলেন। গত ৪ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী মোস্তফা কামাল আদালতে পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযুক্ত অপর দুজন হলেন- আশরাফুল ইসলাম দিপু ও কবির হোসেন। এর আগে গত ৩১ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে পরীমনির জামিন মঞ্জুর করেন। পরদিন গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে মুক্ত হন এ চিত্রনায়িকা। গত ৪ আগস্ট সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পরীমনিকে তার বনানীর বাসা থেকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। পরদিন ৫ আগস্ট বিকেল ৫টা ১২ মিনিটে পরীমনি, চলচ্চিত্র প্রযোজক রাজ ও তাদের দুই সহযোগীকে কালো একটি মাইক্রোবাসে বনানী থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এরপর র্যাব বাদী হয়ে বনানী থানায় পরীমনি ও তার সহযোগী দীপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে। সেই মামলায় পরীমনিকে আদালতে হাজির করলে প্রথমে চারদিনের রিমান্ড এবং পরে আরও দুই দফায় তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। মামলা সূত্রে জানা যায়, পরীমনি ২০১৬ সাল থেকে মাদকসেবন করতেন। এজন্য বাসায় একটি ‘মিনিবার’ তৈরি করেন। সেখানে নিয়মিত ‘মদের পার্টি’ করতেন। চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজসহ আরও অনেকে তার বাসায় অ্যালকোহলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকের সরবরাহ করতেন ও পার্টিতে অংশ নিতেন। ২০১৪ সালে সিনেমায় ক্যারিয়ার শুরু করা পরীমনি এ পর্যন্ত ৩০টি চলচ্চিত্র ও বেশ কয়েকটি টিভিসিতে অভিনয় করেছেন। পিরোজপুরের মেয়ে পরীমনিকে চলচ্চিত্র জগতে নিয়ে আসেন প্রযোজক রাজ।
পরীমণি সঠিক সময়ে আদালতে হাজির না হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের ক্ষোভ: চিত্রনায়িকা পরীমণি সঠিক সময়ে আদালতে পৌঁছাতে না পারায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত শিকদারের আদালতে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু। তিনি বলেন, সকাল ১০টায় হাজিরার কথা। কিন্তু তার জন্য সময় ১২টায় দেয়া হয়েছিল। তারপরেও তিনি আদালতে হাজির হতে না পারাটা খুব দুঃখজনক। এখন দুপুর ১টা বাজে। এভাবে এলে তো চলবে না। আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। গতকাল রোববার (১০ অক্টোবর) পরীমণির হাজিরার দিন ধার্য ছিল। আদালত থেকে দুপুর ১২টায় সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু দুপুর ১টায়ও পরীমণি আদালতে পরীমণি হাজির না হওয়ায় আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য দুপুর আড়াইটায় সময় ধার্য করেছেন আদালত। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সৌরভী বলেন, স্যার আসামি পরীমণি রাস্তায় আছেন। একটু সময় দেন তিনি আদালতে এসে পৌঁছাবেন। এরপর উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক দুপুর আড়াইটায় শুনানির সময় নির্ধারণ করেন।
গত ৪ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী মোস্তফা কামাল আদালতে পরীমণিসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযুক্ত অপর দুজন হলেন- আশরাফুল ইসলাম দিপু ও কবির হোসেন। এর আগে গত ৩১ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে পরীমণির জামিন মঞ্জুর করেন। পরদিন গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে মুক্ত হন এ চিত্রনায়িকা।